https://powerinai.com/

ই-কমার্স

জার্মান ই-কমার্স

জার্মান ই-কমার্স জার্মান ই-কমার্স
 

জার্মান ই-কমার্স


সোর্স : এক্সট্রাডিজিটালডটকমডটইউকে


জার্মান রিসার্চ প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্যাটিস্টা’র তথ্যে বিশ্ব ই-কমার্স মার্কেট ২০২১ সালে ৪.৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের ছিল, যা ২০২২ সালে ৫.৫৪২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের ই-কমার্স মার্কেট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপরদিকে, ইউরোপিয়ান ই-কমার্স গত কয়েক বছর করোনাভাইরাসের মধ্যে ক্রমাগত প্রসার করছে। জার্মান রিসার্চ প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্যাটিস্টা’র মতে, ইউরোপে খুচরা বিক্রয়ের মধ্যে অনলাইন বিক্রয় বেশ অগ্রসরমান। ২০২১ সালের মধ্য ও পশ্চিম ইউরোপে ১৯ শতাংশ বিক্রয় ই-কমার্স খাত থেকে এসেছে, যা ২০১৯ সালে ৬ শতাংশ ছিল। ইউরোপের চারটি অন্যতম ই-কমার্সে অগ্রসরমান দেশ থেকে প্রায় ৫৯ শতাংশ মোট আয় আসে ইউরোপের ই-কমার্স খাতের। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২১ শতাংশ আয় যুক্তরাজ্যে থেকে, জার্মানি থেকে ১৯ শতাংশ, ফ্রান্স ১৩ শতাংশ এবং ৬ শতাংশ ই-কমার্স আয় ইতালি থেকে আসে। আর ২০২১ সালে ই-কমার্স খাতে উল্লিখিত ৪ দেশ থেকে ৬০ শতাংশ আয় আসে, সেই হিসাবে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষের দেশ জার্মানি ২০২২ সালে ই-কমার্স সেক্টরে প্রায় ১৪১.২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজার তৈরি করে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ই-কমার্সের বাজার হবে।


জার্মান অর্থনীতিতে ই-কমার্সের প্রভাব


ই-কমার্সের পদ্ধতিগতভাবে বিক্রি এবং লেনদেনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। জার্মানিতে বিজনেস টু কনজ্যুমার (বিটুসি) মডেল অনেক বেশি বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) মডেল দ্বারা প্রভাবিত এবং ৩-৪ গুণ বেশি অনলাইন আয় সম্পন্ন করছে। জার্মানির অনলাইন মার্কেটপ্লেসে প্রায় অর্ধেকের বেশি বিটুসি লেনদেন হয়; এসএমই এবং বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে প্রায় ২০ শতাংশ অনলাইন বিক্রি সম্পন্ন হয়, ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান প্রায় ৩০ শতাংশ বিক্রি স¤পন্ন করেছে ২০১৮ সালে ওয়েব শপ এবং অ্যাপসের মাধ্যমে। জিএসএমএ ইন্টিলিজেন্সের রিপোর্ট অনুযায়ী জার্মানিতে ২০২২ সালের প্রথম দিকে ১১৭.৯ মিলিয়ন মোবাইল গ্রাহক রয়েছেন, আর জানুয়ারিতে ৭৮.০২ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিলেন; সে হিসেবে অনলাইনে প্রোডাক্ট কেনার সম্ভাবনা বিশাল। ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট অর্থনৈতিক মান উন্নয়ন করছে বৃহৎ পরিসরের মার্কেটে যা প্রতিযোগিতা, স্কেলেবিলিটি এবং নির্দিষ্ট অপশন বৃদ্ধি করছে। ২০১৯ সালে জার্মান জিডিপির ১৫ শতাংশ ই-কমার্সের খুচরা ও পাইকারি সেক্টর থেকে আসে। বর্তমানে ৮৭ শতাংশ জার্মান ক্রেতা প্রত্যাশা করে যে কো¤পানিগুলোর অনলাইন পোর্টাল থাকবে, যেখানে ৬৭ শতাংশ নতুন প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল বিজনেস মডেলের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। জার্মান রিসার্চ প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টার রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধুমাত্র জার্মানিতে প্রতিদিন ডিএইচএল ৬.৭ মিলিয়ন পার্সেল এককভাবে ডেলিভারি করে থাকে। ২২০টি দেশে তাদের প্রোডাক্ট ডেলিভারি পরিষেবা বিদ্যমান। ‘জার্মান ২০২০ : ই-কমার্স কান্ট্রি রিপোর্ট’র তথ্যানুসারে, জার্মানির ৫৩ শতাংশ কাস্টমার অনলাইন কেনা প্রোডাক্ট ফেরত দেয় না, এবং দ্রুত প্রোডাক্ট ডেলিভারি ২৩ শতাংশ কাস্টমার প্রত্যাশা করে। মূল্যের বিষয়ে জার্মানরা কোনো প্রকার ছাড় দেয় না, বরং প্রোডাক্ট সম্পর্কে অনেক প্রশ্ন করে। ৮৯ শতাংশ জার্মান কাস্টমার মাসে অন্তত একবার হলেও অনলাইনে প্রোডাক্ট ক্রয় করে, এবং প্রতি সপ্তাহে তাদের ২৯ শতাংশ প্রোডাক্ট কিনে। জার্মানদের কাছে অনলাইনে প্রোডাক্ট কেনাতে সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্যাটাগরি ফ্যাশন, এরপরে মিডিয়া, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমপিউটার জার্মানের অনলাইন ক্রেতারা ইনভয়েস ব্যবহারে আগ্রহী এবং ২০২০ সালের ‘নেটসর ই-কমার্স রিপোর্ট’র সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, ই-ওয়ালেট জার্মানদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় পেমেন্ট পদ্ধতি, আর পেপ্যাল সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য, যার মধ্যে ৪১ শতাংশ ই-ওয়ালেট, ২২ শতাংশ ইনভয়েস, ১২ শতাংশ কার্ড, ৮ শতাংশ সিপা ডিরেক্ট ডেবিড কার্ড, ৭ শতাংশ অনলাইন ট্রান্সফার, ৪ শতাংশ ডেবিড কার্ড, ৩ শতাংশ মোবাইল পেমেন্ট ওয়ালেট, ১ শতাংশ ইনস্টলমেন্ট পেমেন্ট, ১ শতাংশ পেমেন্ট অ্যাডভান্সড এবং ১ শতাংম ক্যাশ অন ডেলেভারিতে অনলাইন ক্রেতা তাদের প্রোডাক্টের মূল্য প্রদান করেন। ২০২০ সালে জার্মানির ২৫-৪৪ বছর বয়সী অনলাইন ক্রেতাদের ১১ শতাংশ ১ হাজার ইউরোর বেশি অর্থ প্রতি তিন মাসে ব্যয় করেন।


ই-কমার্স বার্লিন এক্সপো এবং ই-কমার্স জার্মান অ্যাওয়ার্ড


রাশিয়ার পর ইউরোপে ই-কমার্স ব্যবসার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রসিদ্ধ দেশ জার্মানি। আর সে জন্য প্রতি বছর জার্মানির বার্লিনে ই-কমার্স ব্যবসার বড় ইভেন্ট ‘ই-কমার্স বার্লিন এক্সপো’ আয়োজন হয়। ১০ হাজারের বেশি বিদেশি দর্শনার্থী এবং ২০০’র বেশি প্রদর্শকের কাছে জনপ্রিয়। কমিউনিটি মিটিং, ই-কমার্স সেক্টরের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত, ইন্ডাস্ট্রি লিডার এবং রিটেইলারদের জন্য ব্যবসায়িক কৌশল ও দক্ষতার উন্নয়নের ভাব বিনিময়ের সুযোগ ‘ই-কমার্স বার্লিন এক্সপো’ করে। গুগল, জিলান্ডো, ফেসবুকের মতো অনলাইন জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান হোস্ট হিসেবে ইভেন্টে কাজ করে। ২০২২ সালে ডিএইচএল, শোপিফাই, রাকুতেন, আইডিয়াএলওর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো প্রদর্শকদের তালিকাতে নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে। ‘ই-কমার্স বার্লিন এক্সপো’র সাথে সংশ্লিষ্ট ইভেন্টগুলোর মধ্যে একটি হলো ‘ই-কমার্স জার্মান অ্যাওয়ার্ড’, তাদের পঞ্চম পর্ব এবার ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হয়। ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির ২০০০ অতিথি ইভেন্টটিতে যোগ দিয়েছিল, এবং ৩৪০’র বেশি প্রতিযোগী কো¤পানি ‘ই-কমার্স জার্মান অ্যাওয়ার্ড’ প্রতিযোগিতার জন্য মনোনীত হয় ১২ ক্যাটাগরিতে। ৪ মে, ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত হওয়া ‘ই-কমার্স জার্মান অ্যাওয়ার্ড’-এ প্রথম পর্যায়ে পাবলিক ভোটিংয়ে ১৮ হাজার ভোট দেয়া হয়। এর মধ্যে বেস্ট সেলস জেনারেটিং টুল ক্যাটাগরিতে ‘ব্লুমরিচ’ প্রতিষ্ঠানটি জয়ী হয়। এই ক্যাটাগরিতে বিটুবি (বিজনেস টু বিজনেস) এবং বিটুসি (বিজনেস টু কনজ্যুমার) ভিত্তিক প্রোডাক্ট বিক্রির উপযোগী টুল পড়ে। বিজ্ঞাপন সিস্টেম, অ্যাফিলিয়েট সফটওয়্যার এবং সিস্টেম, মূল্য নির্ধারণ, সোশ্যাল মিডিয়া সেলস টুল, লিড ও এসইও টুলÑ এগুলোর কার্যক্রম নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানের ওপর ভিত্তি করে পুরস্কার দেয়া হয়।


বেস্ট কাস্টমার


কমিউনিকেশন টুল ক্যাটাগরিতে ‘লিংক মোবিলিটি’ পুরস্কৃত হয়, যেটা কাস্টমার সন্তুষ্টির জন্য কাজ করে। যার মধ্যে কাস্টমার সার্ভিস, ওমনি চ্যানেল কমিউনিকেশন টুল, কাস্টমার বিশ্বস্ততা, এন্ড টু এন্ড মনিটরিং এবং সিআরএম টুলের বিষয় রয়েছে। বেস্ট সলিউশন ফর ইন্টারন্যাশানাল এক্সপেনসনের ক্যাটাগরিতে ‘সেন্ড ক্লাউড’ পুরস্কার জিতে নেয়; যেই ক্যাটাগরিতে ক্রস বর্ডার পেমেন্ট কাঠামো, আন্তর্জাতিক লজিস্টিক সার্ভিস, কারেন্সি নিয়ন্ত্রণের মতো পরিষেবা খাত যুক্ত। বেস্ট লজিস্টিক সলিশন যেটাতে শিপিং, পার্সেল লকার, সাপ্লাই চেইন, প্যাকেজিং, লজিস্টিক অপটিমাইজেশন, কুরিয়ার সার্ভিস এই সেবাগুলোর জন্য ‘এভারটক্স’ পুরস্কার জিতে। বেস্ট প্ল্যাটফর্ম বা শপ সফটওয়্যারে ‘জেটিএল সফটওয়্যার’ পুরস্কৃত হয়, যাতে ই-কমার্স প্লাগইন, ব্যাকএন্ড অর্গানাইজেশন সফটওয়্যার, মার্কেটপ্লেস ম্যানেজমেন্টের বিষয় থাকে। ই-কমার্স পেমেন্ট অপশন অবশ্যই থাকবে যেমন পেমেন্ট গেটওয়ে, মোবাইল পেমেন্ট অপশন ইত্যাদি। আর এই ক্যাটাগরিতে ‘স্ট্রাইপ’ পুরস্কার জিতে নেয়। বেস্ট অ্যানালিটিক্স সলিউশনে ‘চান্নাবেল’ ডাটা ইন্টিগ্রেশন এবং ম্যানেজমেন্ট, রিয়েল টাইম পর্যবেক্ষণের মতো বিষয় কাজ করে। বেস্ট এজেন্সি ক্যাটাগরিতে ‘বেজকম’ প্রতিযোগিতাতে জেতে। বেস্ট আইটি অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল সলিউশনে ‘স্টোরিব্লক’ ক্লাউড এবং হোস্টিং কাঠামো, এপিআই ম্যানেজমেন্ট, সিকিউরিটি, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এবং অন্য আইটি সলিউশনের জন্য অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয়। ই-কমার্স বেস্ট ইনোভেশন/নতুন ডেভেলপমেন্ট ক্যাটাগরিতে ভবিষ্যতে মেশিন লার্নিং, ভয়েস কমার্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের মতো সেক্টরে কোন প্রতিষ্ঠান গত দুই বছর কী করেছে সেটার ভিত্তিতে পুরস্কার দেয়া হয়, আর এবার ‘ড্রপারি’ বিজয়ী হয়। বেস্ট অমনিচ্যানেল সলিউশন ক্যাটাগরিতে ‘জেনট্রাল ইআরপি’ বিজয়ী এবং বেস্ট প্রোডাক্ট কনটেন্ট ক্রিয়েশন টুল ক্যাটাগরিতে ফটো, থ্রিডি মডেলিং, অগমেন্টেড রিয়েলিটি/ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, ক্রিয়েটিভ প্যাকেজিং ‘এক্স সিমান্টিক্স’ পুরস্কার পায়।


জার্মানির সেরা ১০ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান


বিজনেস ইনডেক্সে জার্মানি ১৯০টি দেশের মধ্যে ২২তম অবস্থানে রয়েছে। ২৫-৪৫ বছর বয়সীরা ৪০ শতাংশ মার্কেট ক্রেতা জার্মানি, এবং প্রায় ৮২ মিলিয়ন জার্মান অনলাইনে কেনাকাটা করেন যাদের ৩০ শতাংশ প্রতি সপ্তাহে একবার অনলাইনে প্রোডাক্ট কিনেন। যেহেতু ৫৩ শতাংশ জার্মান ক্রেতা ইন্টারনেটে প্রোডাক্ট কিনে ফেরত দেন না, সেজন্য জার্মান ই-কমার্স ব্যবসার প্রসার ক্রমাগত হচ্ছে এবং জার্মানিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় সেরা ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কথা নিম্নে উল্লিখিত হলো


অ্যামাজন জার্মানি


৪৮৮ মিলিয়ন জার্মান প্রতি মাসে অ্যামাজনডটডিই ই-কমার্স ওয়েবসাইট ভিজিট করে, এবং জার্মানির সবচেয়ে জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইটের তালিকাতে প্রথম স্থানে রয়েছে, এবং তৃতীয় সর্ববৃহৎ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন জার্মানির ই-কমার্স মার্কেট শেয়ার ২৮.৭ শতাংশ জার্মানিতে। বই থেকে শুরু করে ডিজিটাল মিডিয়া, অ্যাপারেল, ইলেকট্রনিক্স, এবং ভিডিও স্ট্রিমিং ও ক্লাউড কমপিউটিং পরিষেবা সকল কিছু অ্যামাজন জার্মানির মাধ্যমে কিনতে পারবেন। কো¤পানিটি বিনামূল্যে শিপিং এবং রিটার্ন খরচ হ্রাস করে, এবং স্বল্পমূল্যে ভালো প্রোডাক্ট কিনতে আপনাকে উৎসাহিত করে। অ্যামাজন জার্মানি ২০২১ সালে ৩১.৬ বিলিয়ন ইউরো আয় করে, জার্মানিতে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড মিডিয়া প্রোডাক্ট বিক্রিতে ৩০-৩৫ শতাংশ অবদান রেখে ১ নম্বর পজিশনে আছে। শুধুমাত্র অনলাইনে ফার্নিচার বিক্রি করে ২০২০ সালে অ্যামাজন জার্মানি ৫৫৫ মিলিয়ন ইউরো আয় করে। ২০২২ সালের মধ্যে জার্মানিতে ৮টি নতুন লজিস্টিক বিল্ডিং তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের, যেখানে নতুন ৩ হাজার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে অ্যামাজন জার্মানিতে। ২০১০-২০ সালে জার্মানিতে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করা হয়, আর জার্মানির ৬০টি লোকেশনে অ্যামাজন কাজ করছে এবং ১৯ হাজারের মতো মানুষ বর্তমানে অ্যামাজন জার্মানিতে কর্মরত রয়েছে।


ইবে জার্মানি


ষষ্ঠ বৃহত্তম ওয়েবসাইট ‘ইবে জার্মানি’ ৮ লাখের বেশি প্রোডাক্ট তাদের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করে; যার মধ্যে গ্যাজেট, ফ্যাশন অন্যতম। ইবেডটডিই ওয়েবসাইটে ব্রাউজ করে আপনার পছন্দের প্রোডাক্ট ক্রয় করতে পারেন। কুরিয়ারে ৩০ দিনের ফ্রি স্টোরেজ সুবিধা প্রদান করা প্ল্যাটফর্মটিতে প্রতি মাসে ২২৯.৩২ মিলিয়ন ভিজিটর আসেন। ২০২২ সালের জুন মাসে ইবে জার্মানিতে ৭৭.৮২ শতাংশ ট্রাফিক সরাসরি আসে, এবং প্রত্যেক ভিজিটে সময় ১২:৩২ সেশন ছিল। ২২.৯ শতাংশ মার্কেট শেয়ার নিয়ে জার্মান ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ৭০.৪৯ শতাংশ পুরুষ এবং ২৯.৫১ শতাংশ নারী ভিজিটর ওয়েবসাইটটিতে ভিজিট করে এবং ২৫-৩৪ বছর বয়সী বিশালসংখ্যক ২৩.৯৫ শতাংশ ভিজিটর ওয়েবসাইটে প্রোডাক্ট কিনতে আসে। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটির ৬৫.৫১ শতাংশ সরাসরি, সার্চইঞ্জিনের মাধ্যমে ২৪.১২ শতাংশ, রেফারলে ৫.৭০ শতাংশ, মেইলের মাধ্যমে ১.৭৯ শতাংশ, ডিসপ্লের মাধ্যমে ১.৪৬ শতাংশের মতো ভিজিটর ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে আসেন।


ইবে ক্লাসিফাইডস বা ebay-kleinanzeigen.de


ইবে ক্লাসিফাইডস ১৪.৮ শতাংশ মার্কেট শেয়ার নিয়ে জার্মানিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে অনলাইন মার্কেট সেক্টরে। ১৬০ মিলিয়ন ভিজিটর প্রতি মাসে সাইটটিতে ভিজিট করে, এবং প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ১০ হাজার কর্মচারী কাজ করেন। ২০০৫ সালে ইবে ক্লাসিফাইডস যাত্রা শুরু করে, যা জার্মানির সবচেয়ে বড় ক্লাসিফাইডস প্রতিষ্ঠান ও অষ্টম বৃহত্তম ওয়েবসাইট। অটোমোবাইল, রিয়েলস্টেট, সার্ভিস, হোম অ্যান্ড গার্ডেন এবং ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট সামগ্রী নিয়ে বিনামূল্যে যেকেউ নতুন, পুরাতন প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন পোস্ট করতে পারবেন। ‘ইবে ক্লাসিফাইডস’ সাইটে ৬৮.৫৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩১.৪৭ শতাংশ নারী ভিজিট করে এবং ২৫-৩৪ বছর বয়সের মানুষরা সবচেয়ে বেশি ওয়েবসাইটটি ভিজিট করে। ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটি সর্বাধিক ৬২.২১ শতাংশ ট্রাফিক সরাসরি, ৩১.৬৯ শতাংশ সার্চইঞ্জিন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ২.৮৬ শতাংশ ভিজিটর আনে।


জিলান্ডো


২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জার্মান ফ্যাশন রিটেইলার প্রতিষ্ঠান জিলান্ডোডটডিই গত ১০ বছরে ২০ শতাংশ করে বাৎসরিক হারে প্রবৃদ্ধি করে। জার্মানিতে প্রতি মাসে ৩০ মিলিয়নের মতো ভিজিটর সাইটিতে ভিজিট করে, প্রতিষ্ঠানটি ১৪.৩ বিলিয়ন ইউরো ২০২১ সালে আয় করে এবং ২০২৫ সালে ৩০ বিলিয়ন ইউরো আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। অনলাইনে ফ্যাশন মার্কেটে জিলান্ডোডটডিই জার্মানিতে এক নম্বর পজিশনে ছিল, এই ক্যাটাগরিতে প্রতিষ্ঠানটি ৯৬ শতাংশ বিক্রি স¤পন্ন করে, এবং ৫৮০০ ব্র্যান্ড পার্টনার এবং ৭ হাজারের অধিক স্টোর জিলান্ডোর সাথে লিস্টেড। ২০২৩ সাল নাগাদ ৪০০-৫০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করে জিলান্ডো চারটি ফুলফিলমেন্ট সেন্টার ২০২৩ সালের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। ৪৮ মিলিয়ন অ্যাকটিভ কাস্টমার এবং ১৪০০০০-এর বেশি প্রোডাক্ট নিয়ে জিলান্ডো প্রতিষ্ঠানটি জার্মানিতে তৃতীয় বৃহত্তম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০২০ সালে তালিকাতে আসে।


২০১৭ সালে সুইডেন এবং বেলজিয়ামে তাদের ফুলফিলমেন্ট সেন্টার চালু করে জিলান্ডো, ২০ মিলিয়নের মতো অ্যাকটিভ ক্রেতা আছে এবং পশ্চিম ইউরোপের ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ফ্যাশন মার্কেটের ৭.৪ শতাংশ শেয়ার ই-কমার্স মার্কেটপ্লেসটির ১০০ দিনের মধ্যে প্রোডাক্ট ফেরত দেয়ার রিটার্ন পলিসি রয়েছে।


ওটটো


জার্মানিতে ২০২০ সালে অনলাইনে ১.৫ বিলিয়ন ইউরোর ফার্নিচার বিক্রি করে ওটটোডটডিই। ওটটো জিএমবিএইচ ও কেজি দ্বারা পরিচালিত অনলাইন স্টোরটি ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করে, যদিও মেইল বর্ডার কোম্পানি হিসেবে ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ফার্নিচারের পাশাপাশি ফ্যাশন, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড মিডিয়ার মতো অনেক প্রোডাক্ট অনলাইনে বিক্রি করে ওটটো। রিসার্চ প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টার কনজ্যুমার মার্কেট আউটলুক ২০২১’র তথ্যে, ৪২ বিলিয়ন ইউরোর ফার্নিচার মার্কেট জার্মান জুড়ে ছিল। তাদের মোট অনলাইন বিক্রির ৩৮ শতাংশ ফার্নিচার ও অ্যাপেল্যান্স জুড়ে। বিশ্বের ২০টি দেশজুড়ে ওটটোর কার্যক্রম থাকলেও জার্মানিতে ফার্নিচার অনলাইনে বিক্রিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, প্রতিষ্ঠানটিতে ফার্নিচারের পরেই ফ্যাশন ৩৪ শতাংশ, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড মিডিয়া প্রোডাক্ট ২০ ভাগের মতো বিক্রি হয়। প্রতি মাসে ওটটো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে ৫৭.২৭ মিলিয়ন ভিজিটর আসেন। ২০২২ সালে ওটটো ৫,৮৯৫.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রোডাক্ট বিক্রি করবে বলে প্রত্যাশা করছে। ওটটো মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে হলে একজন সেলারকে বেশ কিছু কঠিন শর্ত মানতে হবে যেমন কোম্পানির জন্য জার্মান লিগ্যাল ফর্ম এবং ভ্যাট আইডি লাগবে। জার্মান ভাষার উপযোগী কাস্টমার পরিষেবা অফার করা, জার্মান ওয়্যারহাউজ থেকে শিপিং সুবিধা থাকা, ১৯ শতাংশ ভ্যাট ধরে প্রোডাক্ট বিক্রি করতে হবে। অ্যামাজন ও ইবে’র বিকল্প হিসেবে বৃহৎ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটি ‘ওটটো গ্রুপ’ দ্বারা পরিচালিত। নিজস্ব ব্র্যান্ড নামের অধীনে মার্কেটপ্লেসটিতে সবাই প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারে।


মিডিয়ামার্কেটডটডিই


জার্মান ইলেকট্রনিক্স রিটেইলার প্রতিষ্ঠান ‘মিডিয়ামার্কেট’ ১৯৭৯ সালে ‘ব্রিক অ্যান্ড মর্টার’ স্টোর পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং অনলাইন স্টোর হিসেবে ২০১২ সালে তাদের কার্যক্রম চালু করে।


মিডিয়ামার্কেটডটডিই ওয়েবসাইটটিতে প্রতি মাসে ২১.৮ মিলিয়ন ভিজিটর আসে। প্রতিষ্ঠানটি ‘মিডিয়া মার্কেট সাটুরান রিটেইল গ্রুপ’র মালিকাধীন এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স রিটেইলার কো¤পানি। ইউরোপের ১৩টি দেশে ২০০’র বেশি ব্র্যান্ড ইউরোপজুড়ে মিডিয়ামার্কেটডটডিইর মাধ্যমে ১০০০ স্টোরের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট বিক্রি করে। প্রত্যেক স্টোরের ১০ শতাংশ মালিকানা ওই স্টোরের ম্যানেজারের থাকে। বছরে জার্মানিতে প্রতিষ্ঠানটি ১.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে অনলাইন শপটিতে ৮২.৬ শতাংশ ভিজিটর আসে। ‘মিডিয়ামার্কেটডটডিই’ প্রোডাক্টের বিস্তারিত পেজে মেসেজের মাধ্যমে প্রদর্শন করে গত ৪৮ ঘণ্টায় কত পরিমাণ প্রোডাক্ট বিক্রি হয়েছে। মূলত কাস্টমারদের প্রয়োজনের ওপর ভিত্তি করে প্রোডাক্ট বিক্রির কনভার্সন বৃদ্ধি করে। প্রতিষ্ঠানটি পুরো পার্সোনালাইজড নিউজলেটার সাইনআপ ব্যবস্থা চালু করেছে; যা কাস্টমারের লোকেশন, তার পছন্দের ওপর ভিত্তি করে তার কাছে মেসেজ পাঠানো হয়। ‘ডায়নামিক ইয়েল্ড’র রিকমেন্ডেশন ইঞ্জিনের মাধ্যমে কাস্টমারের রিয়েল টাইম ব্রাউজার ডাটা, ডিভাইস ব্যবহার প্রভৃতির অপর ভিত্তি করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের হোম পেজ, ক্যাটাগরি পেজ এবং প্রোডাক্ট পেজ ধরে আকর্ষণীয়ভাবে প্রাসঙ্গিক প্রোডাক্ট মার্কেটিং করে। ‘মিডিয়ামার্কেটডটডিই’র ৫.১০ শতাংশ কনভার্সন বৃদ্ধি পেয়েছে ওয়েব পুশ নোটিফিকেশন ব্যবহার করে।


আইডিয়ালো


আইডিয়ালো একটি কাস্টমার রিভিউ ও প্রাইস কম্পিরিশন ই-কমার্স সাইট, যা জার্মানিতে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। অনলাইন সাইটটি স্পোর্টস অ্যান্ড আউটডোর, বেবি অ্যান্ড চিলড্রেন, ঘর এবং বাগান, খাদ্য, গেমের মতো বিস্তৃত পরিসরে প্রোডাক্ট ই-কমার্স সাইটে পাওয়া যায়। ক্রেতাকে তুলনামূলক প্রোডাক্ট মূল্য নির্ধারণে ভালো প্রোডাক্ট পেতে সহযোগিতা পায়। প্রতি মাসে ৫৫.৭০ মিলিয়ন ভিজিটর আইডিয়ালোডটডিই ই-কমার্স সাইটে ভিজিট করে এবং ৫০ হাজারের বেশি শপ বর্তমানে সাইট ব্যবহার করে। ২১০ মিলিয়ন প্রোডাক্ট লিস্টেড রয়েছে প্রোডাক্ট কোম্পানির পরিজনের জন্য। জার্মানিতে ওয়েবসাইট  ৪৩ নম্বর অবস্থানে রয়েছে, আর কাস্টমারদের মধ্যে ৬৮.৬২ শতাংশ পুরুষ এবং ৩১.৩৮ শতাংশ নারী রয়েছে। আইডিয়ালোডটডিইর ক্রেতাদের মধ্যে ২৪-৩৪ বছর বয়সী ২৬.৪৬ শতাংশ সবচেয়ে বেশি প্রোডাক্ট কিনে, এরপরে ৩৫-৪৪ বয়সী ২০.৮০ শতাংশ লোক জার্মানিতে প্রতিষ্ঠানটির অনলাইন ক্রেতা। সরাসরি ওয়েবসাইটে ৩৭.০১ শতাংশ ভিজিটর আসে, আর সবচেয়ে বেশি সার্চ করে ৫৮.৩১ শতাংশ ভিজিটর আসে, আর যথাক্রমে রেফারেলে ২.০৮ শতাংশ, ডিসপ্লের মাধ্যমে ০.৯৪ শতাংশ, ০.৮৪ মেইলে, এবং সোশ্যাল সাইট থেকে ০.৮২ শতাংশ ভিজিটর ওয়েবসাইটে আসে।


সাতুরান


জার্মান চেইন ইলেকট্রনিক্স স্টোর ‘সাতুরান’ মিডিয়া মার্কেট সাতুরান রিটেইল গ্রুপের একটি অনলাইন স্টোর। প্রতি মাসে ২০.৫৯ মিলিয়ন ভিজিটর সাতুরানডটডিইর ওয়েবসাইটে ভিজিট করে। কমপিউটার ইলেকট্রনিক্স এবং প্রযুক্তির জন্য জার্মানিতে ৪ নম্বর অবস্থানে প্রতিষ্ঠানটি রয়েছে। জার্মানভিত্তিক সাতুরানডটডিই বিভিন্ন ক্যাটাগরির ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট বিক্রি করে, ২০১১ সালে অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি মূলত ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড মিডিয়া প্রোডাক্টকে মূল টার্গেট করে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করে, এই ক্যাটাগরিতে জার্মানিতে তাদের অবস্থান পঞ্চম। ২০২১ সালে ৭৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওপর আয় করে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩৭টি স্টোর জার্মান জুড়ে ছিল। ২৫-৩৪ বছরের ২৭.৯১ শতাংশ ক্রেতা সাতুরানর মূল ক্রেতা, এবং সরাসরি ৪৫.৪৯ শতাংশ ভিজিটর ওয়েবসাইটে আসে।


এরপরেই যথাক্রমে সার্চইঞ্জিনের মাধ্যমে ৪১.৯১ শতাংশ, রেফারেলে ৬.৬২ শতাংশ, ডিসপ্লের মাধ্যমে ৩.৬০ শতাংশ, সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের মাধ্যমে ১.৪৬ শতাংশ এবং মেইলের মাধ্যমে ০.৯১ শতাংশ অনলাইন ভিজিটর ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে আসেন।


থোমান


ইউরোপের সবচেয়ে বৃহৎ মিউজিকের যন্ত্রপাতির জন্য থোমানডটডিই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটি জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে জার্মানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত সাইটটিতে প্রতি মাসে ২২.৫৯ মিলিয়ন ভিজিটর আসে। ৭৩.৯১ শতাংশ পুরুষ এবং ২৬.০৯ শতাংশ নারী ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করে এবং ২৫-৩৪ বছর বয়সের ৩০.৬১ শতাংশ মানুষজন ওয়েবসাইটে আসে। সরাসরি প্ল্যাটফর্মটিতে ৪৫.৩৭ শতাংশ ভিজিটর আসে, এরপরে ৪৫.৩২ শতাংশ সার্চইঞ্জিনের মাধ্যমে, ৪.৭৮ শতাংশ সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট, ৩ শতাংশ রেফারেল, ১.০৪ শতাংশ মেইল এবং ০.৪৯ শতাংশ ডিসপ্লের মাধ্যমে ভিজিটর ই-কমার্সে আসে। থোমানডটডিই সাইটটি থোমান জিএমবিএইচ প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত, এবং ১,৩৮৮.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ২০২১ সালে প্ল্যাটফর্মটি আয় করে।


যে বিষয়গুলো জার্মানিরা ই-কমার্স সাইটে গুরুত্ব দেয়


ই-কমার্স কো¤পানি দ্রুত জার্মানিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, গত এক বছর ১৫ শতাংশ বেড়েছে অনলাইন বিক্রি। কয়েকটি বিষয় পর্যবেক্ষণ করে সবচেয়ে ভালো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম আপনি ব্যবসার জন্য পছন্দ করতে পারবেন।


মূল্য


ব্রিক অ্যান্ড মর্টারার কো¤পানি অনলাইনে কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেছে। আপনাকে জানতে হবে আপনি কেমন অর্থ প্রদান করবেন প্রোডাক্ট কিনতে একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে। বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম প্রোডাক্ট অনুযায়ী মূল্য কম-বেশি হবে। সাবস্ক্রিপশন, কিংবা মাসিক ফি নির্ধারণ হতে পারে।


ইন্টিগ্রেশন


ই-কমার্স সিস্টেমে আপনাকে প্লাগইন এবং অন্যান্য টুলের সুবিধা নিতে হবে। অ্যাকাউন্টিং প্লাগইন সেলস, ট্যাক্স, রিভিনিউ এবং প্রফিটের জন্য সাহায্য করে। কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে ইমেইল মার্কেটিং প্লাগইন, কাস্টমারকে প্রোডাক্টের সাথে পুরস্কৃত করতে রিওয়ার্ড প্লাগইন। শিপিং অ্যাপসের মাধ্যমে ডেলিভারির মতো সুযোগ দেয়া।


এসইও


ই-কমার্স কোম্পানির এসইওর উন্নতি করতে হয়, যাতে সার্চ রেজাল্টে ভালো অবস্থান প্রদর্শন করে। যখন ক্রেতারা একইরকম প্রোডাক্ট খুঁজে পেতে চায় তখন সেটা আপনাকে খুঁজে নিতে হবে, আর এজন্য এসইও ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট থাকতে হবে। ডোমেইন নাম, ব্লগ সাইট, ফিডব্যাকের জন্য কাস্টমারকে সুবিধা প্রদান করা।


কাস্টমার সার্ভিস


প্রতিষ্ঠানের জন্য কাস্টমার সার্ভিস বেশ গুরুত্বপূর্ণ, এতে কাস্টমারের সাথে ভালো স¤পর্ক থাকে।


পর্যবেক্ষণ


আপনার অনলাইন স্টোর ব্যবসা প্রসারের মাধ্যম, সেজন্য ওয়েবসাইটে কে ভিজিট করে, পেমেন্ট পদ্ধতি কী, অর্ডার পরিমাণ কী, বর্তমান ডাটা পর্যবেক্ষণ করা দরকার।


সিকিউরিটি


কেউ তার ওয়েবসাইটের তথ্য সুরক্ষিত নয় এমন ওয়েবসাইটে রাখতে চায় না। কাস্টমারের জন্য সিকিউরিটি বেশ অর্থবহ, সফটওয়্যার দ্বারা সিকিউরিটি বিল্টইন অবস্থায় থাকে এবং এইচটিটিপিএস অথবা এসএসএলকে সাপোর্ট করতে প্ল্যাটফর্ম নিশ্চিত করে এবং কাস্টমারের ডাটা নিরাপদ রাখে।


মোবাইল ব্যবহার উপযোগী


৬০ শতাংশ সার্চ মোবাইল ডিভাইস দ্বারা সম্পন্ন হয়, এবং সার্চগুলো মোবাইলের মাধ্যমে কেন্দ্রে উৎসাহিত করে।


কাস্টমার ধরে রাখতে কী করতে হবে


নতুন একজন কাস্টমার ধরা ৫-২৫ গুণ কঠিন কাজ, আর ৫ শতাংশ নতুন কাস্টমার বৃদ্ধির কারণে ৯৫ শতাংশ আয় বেড়ে যায়। কয়েকটি বিষয় কাস্টমার ধরে রাখতে প্রয়োজন হয়, যেমন


কাস্টমারের বিশ্বস্ততা অর্জন


পার্সেল মনিটরের মতে, ৮৬ শতাংশ ক্রেতা কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতি আশ্বস্ত হয় যদি প্রতিষ্ঠানটি কাস্টমারকে স্বাগত জানায়। অনেক প্রতিষ্ঠান ইমেইলের মাধ্যমে প্রোডাক্ট এবং কার্যক্রম স¤পর্কে সম্ভাব্য ক্রেতাকে তথ্য প্রদান করে, যা ক্রেতার সাথে দীর্ঘ পর্যায়ে স¤পর্ক স্থাপনে প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা করে।


শপিং অভিজ্ঞতা প্রদান


৬৫ শতাংশ ব্র্যান্ড দ্রুত এবং সহজ লেনদেন অফার করে, ডিজিটাল এক্সপেরিয়েন্স বা অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এটি সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কাস্টমার ধরে রাখা বৃদ্ধি পায়। অ্যামাজন সেই রকম মার্কেটপ্লেস যা তাদের কাস্টমারকে এইরকম প্রোডাক্ট কেনার সুবিধা দেয়। ই-কমার্স জায়ান্ট সাম্প্রতিককালে মাস্টারকার্ড টোকেনাইজেশন প্রযুক্তির যাত্রা শুরু করে। এতে কাস্টমার কার্ড ফাইলে সংরক্ষিত হয়, যা অপরিমেয়ভাবে আপডেট হতে থাকে।


কাস্টমার প্রথম অগ্রাধিকার


কাস্টমার সার্ভিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কাস্টমার ধরে রাখাতে, যদি আপনার কাস্টমার সার্ভিস ক্রেতার চাহিদা পূরণ করে তাহলে পুনরায় ক্রেতা আবার প্রোডাক্ট কিনবে। সেক্ষেত্রে কাস্টমার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করতে পারে, যেমন মুখে মুখে মানুষের কাছে মার্কেটিং করতে পারে কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করতে পারে।


কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি


ব্যবসাকে কাক্সিক্ষত ব্যবসায়িক লক্ষ্যে পৌঁছাতে কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি বা সমাজের প্রতি কিছু দায়বদ্ধতা বাণিজ্যিকভাবে আপনাকে পালন করতে হবে। কাস্টমার শুধু প্রোডাক্টের মানের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠান থেকে প্রোডাক্ট কিনে না, বরং প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড ভ্যালুকে ৬০ শতাংশ ক্রেতা গুরুত্ব দেয়, অ্যাকসেন্সারের মতে। এতে নতুন এবং পুরনো ক্রেতা ধরে রাখতে সুবিধা হয়।


জার্মান ই-কমার্স মার্কেট যেকোনো দেশের ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসা প্রসারে দারুণ জায়গা। বিশেষ করে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির প্রোডাক্টকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট বয়সের ক্রেতাদের কাছে নিজের প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট মার্কেট তৈরি করতে পারে। অনেক বেশি প্রতিযোগিতার ই-কমার্স ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু দেশ হলেও জার্মানি অনেক বেশি সম্ভাবনাময় ই-কমার্সের ভূমি, কারণ প্রোডাক্টের গুণগত মান ও স্বল্পমূল্যে প্রোডাক্ট জার্মান নাগরিকদের কাছে বেশ গুরুত্ব রাখে।








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।