ই-কমার্স শিপিং
ই-কমার্স ব্যবসার ঊর্ধ্বগতির জন্য ২০২২ সালে বিশ্বের ই-কমার্স লজিস্টিক মার্কেট পরিধি ৫৩৫,৮৯৫ মিলিয়ন ডলার হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই লজিস্টিক সাপোর্ট মার্কেটে ডেলিভারি সেন্টার, রিটার্ন প্রসেসিং সেন্টার, প্যাকেজিং, ওয়্যারহাউজ, পরিবহনসহ আরও ই-কমার্সের আনুষঙ্গিক বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, অর্থাৎ ই-কমার্স প্রোডাক্ট শিপিং এক বড় কর্মযজ্ঞ, যেখানে একজন ই-কমার্স ব্যবসায়ীর কাছে অনলাইনে একটি প্রোডাক্ট অর্ডার আসা হচ্ছে সঠিক মানসম্মত প্রোডাক্ট বাছাই করা, প্যাকেট করা, লেবেলিং এবং সঠিক ঠিকানাতে ক্রেতার কাছে প্রোডাক্ট শিপিং করা।
ই-কমার্স শিপিং কী
ই-কমার্স ব্যবসায় সঠিক সময়ে নিরাপদ প্রোডাক্ট শিপিং বা প্রেরণ ক্রেতাকে কেনাকাটায় আগ্রহী এবং প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে বিশ্বাস স্থাপনে ভ‚মিকা রাখে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ই-কমার্স ওয়েবসাইটে আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি নির্দিষ্ট অর্থ প্রদানের মাধ্যমে অর্ডার করলে আপনার প্রদানকৃত ঠিকানাতে কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্নের মাধ্যমে শিপিংয়ের সহায়তায় আপনার ঠিকানাতে সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পৌঁছে যাবে।
ই-কমার্স শিপিং কেন গুরুত্বপূর্ণ
ই-মার্কেটারের গবেষণা হিসেবে ৬২ ভাগ আমেরিকান অনলাইন ক্রেতা দ্রæত প্রোডাক্ট শিপিংকে গুরুত্ব দেন এবং ৫৪ ভাগ ক্রেতা সহজ ডেলেভারি বা শিপিং পদ্ধতি তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো মনে করেন। যেমনÑ বিশ্ববিখ্যাত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘অ্যামাজন’ প্রাইম ডে অফারে একই দিনে কিংবা পরবর্তী দিনে অতিরিক্ত খরচ ব্যতীত প্রোডাক্ট শিপিং করে, এবং ক্রেতাদের মূল আকর্ষণ থাকে কত দ্রুত অর্ডারকৃত প্রোডাক্ট তাদের কাছে পাবেন। জার্মান রিসার্চ প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্যাটিস্টা’র তথ্য হিসেবে তাদের জরিপে অংশগ্রহণকারী ৬৩ ভাগ লোক শিপিং খরচের কারণে এবং ৩৬ ভাগ প্রোডাক্ট শিপিং দেরিতে হয় বলে অনলাইনে অর্ডার প্রদান করে না বলে মতামত দেন। আরেকটি গবেষণায় ৭২ ভাগ ক্রেতা অনলাইন প্রোডাক্ট কেনাতে ফ্রি শিপিংকে গুরুত্ব দেন।
প্রচলিত কয়েকটি ই-কমার্স শিপিং পদ্ধতি
বেশ কিছু শিপিং অপশন ক্রেতা নিজের চাহিদা এবং সময় অনুযায়ী পছন্দ করেন। আপনার ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের জন্য কয়েকটি অপশন ক্রেতার জন্য চালু রাখতে পারেন। যেমন
এক দিনে প্রোডাক্ট ডেলিভারি
প্রাইম ডে’তে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘অ্যামাজন’ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্রেতার কাছে প্রোডাক্ট শিপিং করতে চেষ্টা করে।
দুই দিনে প্রোডাক্ট শিপিং
অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এক দিনে প্রোডাক্ট শিপিং করলেও দুই দিনের মধ্যে প্রোডাক্ট শিপিং পদ্ধতি চালু রাখে। স্ট্যাটিস্টা’র হিসাবে ১৮ ভাগ মানুষ অর্ডার করার পরের দিনেই প্রোডাক্ট পেতে চান। আরেকটি তথ্যে, ৪৪ ভাগ মানুষ দুই দিনের মধ্যে অর্ডারকৃত প্রোডাক্ট গ্রহণ করতে আগ্রহী এবং দ্রæত ও স্বল্প খরচে প্রোডাক্ট শিপিংয়ের জন্য দুই দিন আদর্শ সময়।
দীর্ঘ প্রোডাক্ট শিপিং
২১ ভাগ মানুষ ৩-৪ দিন পর্যন্ত প্রোডাক্টের শিপিংয়ের জন্য অপেক্ষা করতে প্রস্তুত, আবার ১০ ভাগ মানুষ ৫-৭ দিন এবং ২ ভাগ মানুষ ১-২ সপ্তাহ পর্যন্ত তাদের প্রোডাক্ট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেন। এ ক্ষেত্রে প্রোডাক্ট কত সময়ের মধ্যে পেলে একজন মানুষ তার প্রয়োজন মেটাতে পারবেন সেটা নির্ভর করে।
ই-কমার্স প্রোডাক্ট শিপিং রেট অপশন
ই-কমার্সে পাঁচ ধরনের শিপিং রেট প্রতিষ্ঠানের পরিষেবার ধরন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন, যেমন
ফ্ল্যাটরেট শিপিং
প্রোডাক্টের ভর, ধরন কিংবা সাইজের ওপর নির্ভর করে না এই শিপিং পদ্ধতির রেট কিংবা সার্ভিস অর্থ নির্ধারণ, বরং শিপিং কোম্পানিগুলোর বরাদ্দকৃত বিভিন্ন বক্সের জন্য নির্ধারিত ফি থাকে, যার ওপর ভিত্তি করে প্রোডাক্ট শিপিংয়ের অর্থ প্রদান করতে হবে, অর্থাৎ আপনার প্রোডাক্ট যে পরিমাণ থাকুক, সেটা প্যাকেটে রাখা গেলেই সেই প্যাকেট অনুযায়ী অর্থ প্রদান করতে হবে। যেমনÑ আমেরিকাতে এই শিপিং পরিষেবা ১-৩ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের পোস্টাল সার্ভিস ‘ইউএসপিএস’ প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ৭০ পাউন্ড ভর পর্যন্ত ফ্ল্যাটরেটে শিপিংয়ে প্রোডাক্ট ডেলিভারি করে। তাদের ৮ ১১/১৬″ বাই ৫ ৭/১৬″ বাই ১ ৩/৪″ সাইজের বক্সের জন্য বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ৭.৫০ ডলার অর্থ প্রদান করতে হয়।
রিয়েল টাইম ক্যারিয়ার রেট
যদি আপনার একটি ওয়েবসাইট ই-কমার্স শিপিং পরিষেবার সাথে একীভ‚ত থাকে, তাহলে চেক-আউটের সময় রিয়েল টাইম ক্যারিয়ার রেট নির্ধারণ করতে পারে। এতে প্রত্যেক অর্ডারের সময় এলাকা এবং ডেলিভারির পরিমাণের ওপর নির্ভর করে চার্জ নির্ধারণ হবে। এতে প্রোডাক্ট কখন পাবে এবং শিপিংয়ের জন্য কত পেমেন্ট ক্রেতাকে করতে হচ্ছে তাও স্পষ্ট করে জানা যাবে।
ফ্রি শিপিং
‘অ্যামাজন প্রাইম’র মাধ্যমে অ্যামাজন কোম্পানি ই-কমার্স কেনাকাটাতে সর্বপ্রথম ফ্রি শিপিং প্রবর্তন করে। অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ক্রেতা প্রোডাক্ট কেনার সময় শিপিং খরচ নেয় না, বিনামূল্যে প্রোডাক্ট শিপিংয়ের ব্যবস্থা চালু করে ক্রেতার বিশ্বাস অর্জন করার চেষ্টা করে। দুই ধরনের ফ্রি শিপিং ব্যবস্থা আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য চালু করে আপনি লাভবান থাকতে পারেন। একটি হলো, প্রোডাক্টের মূল্য বৃদ্ধি করে শিপিং খরচ নিয়ন্ত্রণ করা এবং অপরটি, নির্দিষ্ট মূল্যের বেশি প্রোডাক্ট কিনলে কিংবা কিছু সময়ের জন্য আপনার ক্রেতাকে ফ্রিতে প্রোডাক্ট শিপিং সুবিধা প্রদান করে আরও বেশি প্রোডাক্ট কিনতে উৎসাহিত করতে পারেন। যেমন ‘প্যাকেজ ফ্রি শপ’ আমেরিকার মধ্যে অবস্থানকারী কেউ ৩৫ ডলারের বেশি প্রোডাক্ট কিনলে ফ্রি শিপিং সুবিধা প্রদান করে। ‘গ্লোবাল ওয়েব ইনডেক্স’ সূত্রমতে, ২০২০ সালে ৫৩ ভাগ ক্রেতার অনলাইনে কেনাকাটা অন্যতম কারণ ছিল ফ্রি ডেলিভারির সুবিধা।
এক্সপেডিট শিপিং
এক দিনে ডেলিভারি কিংবা পরের দিনে শিপিং, এই ধরনের শিপিং অপশন শিপিং রেট বেশি হলেও ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত প্রোডাক্ট সরবরাহের কারণে ক্রেতা আরও বেশি প্রোডাক্ট কিনতে উৎসুক থাকে। গ্লোবাল ওয়েব ইনডেক্সের গবেষণা হিসাবে ২০২০ সালে ২৮ ভাগ ই-কমার্স ক্রেতা পরের দিনে ডেলিভারি হবে বলে অনলাইনে প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী হয়েছিলেন।
লোকাল ডেলিভারি
শোপিফাই’র তথ্য হিসাবে অনলাইন কেনাকাটায় ২৩ ভাগের বেশি ক্রেতা বেশি ব্যয় করেন এবং ২৫ ভাগের বেশি অর্ডার দেন যখন লোকাল ডেলিভারির মতো সুযোগ-সুবিধা তারা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে পান। এতে নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট বিক্রেতা সরাসরি ক্রেতার কাছে প্রোডাক্ট কোনো প্রকার শিপিং প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ব্যতীত প্রেরণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ২১ ভাগ ক্ষুদ্র-মাঝারি অনলাইন উদ্যোক্তা সবসময় নিজেদের দেশের ভেতরে ক্রেতাদের ফ্রি শিপিং সুবিধা প্রদান করে। লোকাল ডেলিভারিতে ক্রেতার সাথে দ্রæত যোগাযোগ রক্ষা করা এবং পরবর্তীতে আরও অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
আন্তর্জাতিক শিপিং সুবিধা দেয়া প্রতিষ্ঠানের রেট কীভাবে জানবেন
কোথায়, কোন দেশে প্রোডাক্ট শিপিং করলে কত খরচ হবে তা নিচের শিপিং প্রতিষ্ঠানগুলোর রেট ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে সহজে জানতে পারবেন।
ফেডএক্স : https://www.fedex.com/ratefinder/home
ইউপিএস : https://wwwapps.ups.com/ctc/request
অস্ট্রেলিয়া পোস্ট : https://auspost.com.au/parcels-mail/calculate-postage-delivery-times/
ইউনাইটেড স্টেট পোস্টাল সার্ভিস : https://postcalc.usps.com/
ই-কমার্স শিপিং কৌশল
প্রোডাক্ট শিপিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রোডাক্ট কী, কেমন ভর এবং কোথায় আপনি ডেলিভারি করছেন, আর কীভাবে ই-কমার্স প্রোডাক্ট অর্ডার পাওয়া থেকে শুরু করে যাবতীয় সব বিষয়ের ডাটা বা তথ্য সংরক্ষণ করে কাজে লাগাচ্ছেন। এই সিদ্ধান্তগুলো নিতে কিছু প্রযুক্তিগত কৌশল অবলম্বন করে প্রোডাক্ট শিপিংয়ের কাজে গতি ত্বরান্বিত করতে পারেন, যেমন
ডাটা বা তথ্য সংরক্ষণ
ওয়েবসাইটে যে অর্ডারটি পাচ্ছেন সেই প্রোডাক্ট নাম, প্রোডাক্ট পরিমাণ, কোথায় শিপিং হবে যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ কিংবা ব্যাকআপের জন্য ‘জেটপ্যাক’ কিংবা ‘আপড্রাফটপ্লাস’ প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার ওয়েবসাইটের সব সার্ভার ছাড়াও আপনার কাছে ভিন্ন ক্লাউড প্ল্যাটফর্ম যেমন গুগল, ড্রপবক্স, ওয়ান ড্রাইভে সংরক্ষণের সুবিধা থাকবে। এতে যে কোনো কারণে ব্যাকআপ হিসেবে এই ফাইলগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে ওয়েবসাইটের ওয়ার্ডপ্রেস, উকমার্স এবং অন্য টুলগুলোর সাথে মিলিতভাবে কাজ করতে পাছে কিনা।
উকমার্স সেটিংস
যদি ফ্রি শিপিং, লোকাল পিকআপ কিংবা ফ্ল্যাটরেট শিপিং প্রোডাক্ট ডেলিভারিতে ক্রেতাকে অফার করেন তাহলে উকমার্স প্লাগইনটি ওয়েবসাইটে ইনস্টল থাকলেই সব বিষয় কাজে লাগাতে পারবেন। ওয়েবসাইটের ড্যাশবোর্ড থেকে উকমার্স সেটিংসে গিয়ে শিপিং অপশনে ক্লিক করুন। সেখানে শিপিং জোন তৈরি করে কাস্টমার লোকেশন এবং প্রোডাক্টের ধরনের ওপর নির্ভর করে রেট নির্ধারণ করতে পারেন। এছাড়া উকমার্সের বিভিন্ন শিপিং এক্সটেনশন ব্যবহার করে শিপিং নম্বর এবং ওয়্যারহাউজের তথ্য একীভ‚ত করে শিপিং কার্যক্রম পরিচালনা সহজ করতে পারেন।
ই-কমার্স শিপিংয়ে যে বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল করবেন
ই-কমার্স প্রোডাক্ট শিপিংয়ে প্যাকেজিং শুধুমাত্র প্রোডাক্টের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে না, এক্ষেত্রে ব্র্যান্ড ইমেজসহ খরচ ও অন্য বিষয়গুলোকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে, যেমন
বক্স পরিমাপ এবং ধরন
যখন শিপিং প্রতিষ্ঠান দিয়ে প্রোডাক্ট ডেলিভারি দেবেন তখন প্রোডাক্টটি পুরো বক্সের মধ্যে জায়গা পাচ্ছে কিনা তা লক্ষ করুন, প্রোডাক্টের চেয়ে বক্স বড় হলে আপনাকে বক্সের সাইজের জন্য অতিরিক্ত পেমেন্ট করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের বক্স কিংবা পলিব্যাগ আছে যেটা প্রোডাক্টের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন, যেমন রোল এন্ড কোরেগেটেড বক্স, যেটা ট্যাবলকসহ থাকে এবং ই-কমার্সে প্যাকেজিংয়ে সবচেয়ে বহুল প্রচলিত। উচ্চমানের কার্ডবোর্ড ব্যবহার হওয়ায় সুরক্ষা নিশ্চিত করে। আরেক ধরনের বক্স হচ্ছে ‘¯øটেড বক্স’, যেটা বড় ধরনের প্রোডাক্টের প্যাকেজিংয়ে ব্যবহার করা এবং যথেষ্ট উন্নত মজবুত হয়। ফাইলপত্র প্রেরণে পলি মেইলার ব্যবহার হয়, জামা-কাপড় পাঠানোতেও স্বল্পমূল্যের প্যাকেটটি ব্যবহার হয়।
পর্যাপ্ত ব্র্যান্ডিং করছেন কিনা
অবশ্যই ই-কমার্স শিপিংয়ের সময় প্রোডাক্ট প্যাকেজিংয়ের ওপর ব্র্যান্ড লোগো ব্যবহার করবেন, এতে প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি এবং ক্রেতার বিশ্বাস অর্জন ও পরবর্তীতে প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী করে।
বক্স ডিজাইন প্রিন্টিং এবং মূল্য নির্ধারণ
আকর্ষণীয় প্যাকেজিং বক্স ব্যবহার করুন, যাতে ক্রেতা প্রোডাক্ট পাওয়ার সাথে সাথে একটা আকর্ষণ অনুভব করেন। আর প্রতিষ্ঠান নতুন হলে স্বল্প খরচে কত ভালো প্যাকেজিং করা যায় সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিন। এতে সাশ্রয়ী রেটে বেশি ক্রেতার প্রোডাক্টের জন্য প্যাকেজিং বক্স তৈরি করতে পারবেন। আর অবশ্যই সুন্দর এবং সবার কাছে ভালো লাগার মতো প্যাকেজ বক্সের রং করুন, যেটা ক্রেতার ওপর অনেক ভালো প্রভাব রাখে। সেক্ষেত্রে প্যাকেজ প্রিন্টিংয়ে কয়েকটি ধরনে মনোযোগ দিতে পারেন, যেমনÑ ‘লিথোগ্রাফি’ যেটা বক্সে প্রাণবন্ত রং চাইলে সবচেয়ে উপযোগী, রংয়ের কোয়ালিটি ভালো এবং ১৯৭৬ সালে আবিষ্কৃত তেল এবং পানির মিশ্রণে প্রিন্টিং উপায়টি পুরো বক্স কাভার দেয়াতে ব্যবহার হয়। আরেকটি ‘ফ্লেক্সোগ্রাফি’, ১৯৭০ সালে উদ্ভাবিত কালি একটি শিটে ব্যবহার করে পরে বক্সে সেটা পরিবর্তন করে। এটি হাই-প্রেশিং মেশিনে প্রিন্টিং। যখন বহুসংখ্যক ব্যবহার হয়, তখন স্বল্পমূল্যে কাজ করা যায়। ডিজিটাল প্রিন্টিং মেশিনে স্বল্প খরচে একটি ডিজাইন স্তর কার্ডবক্সের ওপর আবৃত করে দেয়া হয়।
টেকসই বক্স তৈরি করুন
প্রোডাক্ট শিপিংয়ে সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হয় প্রোডাক্টটি সুরক্ষিত থাকছে কিনা। টেকসই এবং মজবুত ডিজাইনের বক্স তৈরি করুন, যা প্রোডাক্টের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। আরও সুরক্ষার জন্য বাবল প্যাকেট, কয়েক স্তরের কাগজ কিংবা পলিব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। প্যাকেজিংয়ে বক্সের পুরুত্বে ‘সিঙ্গেল ওয়াল বোর্ড’ এবং ‘ডাবল ওয়াল বোর্ড’ ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো বিভিন্ন লেবেলের হয়, যা টেকসই বক্স তৈরি করাতে ভ‚মিকা থাকে।
বাজেট নির্ধারণ করুন
শিপিং করতে আপনার কত ধরনের বিষয়ে অর্থ প্রয়োজন তা খেয়াল করা দরকার; যেমন বক্স তৈরি, লেবেলিং, যাতায়াত খরচ, যদি রিটার্ন আছে সেই খরচ, ডিজিটাল অর্থ লেনদেনে ট্যাক্স, প্রোডাক্টের ওপর আরোপিত কর এবং ডেলিভারিম্যানের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ প্রদান এইসব খরচের কথা খেয়াল করে শিপিং বাজেট নির্ধারণ করতে হবে। তাছাড়া এই বাজেটের পাশাপাশি সফটওয়্যার ব্যবহার করা, যাতে প্রোডাক্টটি কোথায় আছে সেটা জানা যায় এবং কোন প্রোডাক্টে কয়টি শিপিং হয়েছে সে তথ্য রাখা। এরজন্য একটি অর্থ বরাদ্দ রাখতে পারেন। প্রোডাক্ট শিপিংয়ের আগে সেই প্রোডাক্ট সংরক্ষণে নির্দিষ্ট জায়গার জন্য বাজেট রাখা এবং সেটা দেখভাল ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণে যাবতীয় লোক নিয়োগ, বেতন এবং প্রোডাক্ট মান নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়েও আপনাকে বাজেট নিয়ে কাজ করতে হবে।
ই-কমার্স শিপিং ব্যবস্থা সামগ্রিকভাবে অনেকগুলো কাজ, প্রতিটি ধাপের এজন্য ভালো বাস্তবায়ন অবশ্যই কোম্পানির প্রোডাক্ট ক্রেতার কাছে পৌঁছানো দ্রুত করে।
০ টি মন্তব্য