https://powerinai.com/

ই-কমার্স

জাপান ই-কমার্স

জাপান ই-কমার্স জাপান ই-কমার্স
 

জাপান ই-কমার্স


সূর্যোদয়ের দেশ জাপান বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ ই-কমার্স ব্যবসার মার্কেট। ‘গ্লোবাল ডেটা’র তথ্য হিসেবে, ২০২১ সালের শেষে অনলাইন কেনাকাটা রেজিস্টার্ডে ১০.৫ ভাগ প্রবৃদ্ধি হয় দেশটির। জুলাই, ২০২১ সালে জাপানের অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে, ৫০ ভাগের বেশি জাপানিজ গৃহস্থালি প্রোডাক্ট ও সার্ভিস অনলাইনে কেনাকাটা সম্পন্ন করে। ডিএমএফএ’র (ডিজিটাল মার্কেটিং ফর এশিয়া) তথ্যে, জাপানের ক্রস বর্ডার শপিং ১৭.২ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হিসেবে ২০২২ সালে জাপানে ১৮.৩ ভাগ আন্তর্জাতিক কেনাকাটা বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করা যায়, অর্থাৎ, ২০.২ মিলিয়ন জাপানিজ ক্রেতা ২০২২ সালে বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে শপিং করবেন।   

জাপানের সম্ভাবনাময় ই-কমার্স খাত 


ই-মার্কেটারের ২০২১ নিয়ে পূর্বাভাসে ১৪৪.০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্ভাবনাময় ই-কমার্স ব্যবসা খাত ছিল জাপানে ২০২১ সালে। ১২৬ মিলিয়ন জনগোষ্ঠীর দেশ জাপানে বাৎসরিক মাথাপিছু গড় আয় ৪১,৬৯০ মার্কিন ডলার নিয়ে বর্তমানে ১৭৭.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ই-কমার্স ব্যবসার বাজার জাপানে রয়েছে; যার ৬০ ভাগ ক্রেডিট কার্ড, ১৯ ভাগ ব্যাংক লেনদেন, ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে ৯ ভাগ এবং অন্যান্য উপায়ে ৮ ভাগ ও ক্যাশে ৩ ভাগ অর্থ লেনদেন সম্পন্ন হয়। আর জনপ্রিয় পেমেন্ট সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে কনবিনি, রাকুটেন পে, ওয়েবমানি। অনলাইন সার্চইঞ্জিন ব্যবহারের শীর্ষে রয়েছেÑ গুগল ৭৭ ভাগ, ইয়াহু ১৮ ভাগ এবং বিং ৫ ভাগ। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে ২৯ ভাগ ব্যবহার নিয়ে ইউটিউব সবার আগে এবং এর পরে লাইন ২৫ ভাগ, টুইটার ২০ ভাগ, ইন্সট্রাগ্রাম ১৪ ভাগ এবং ফেসবুক ১২ ভাগ জাপানের মানুষ ব্যবহার করেন। অপরদিকে, লজিস্টিক সাপোর্ট পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে ১৯০ দেশের মধ্যে ৫ম স্থানে জাপানের অবস্থান। ২০২৪ সালে ই-কমার্স খাতে জাপানে বিক্রির পরিমাণ ২৬৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 


ডেটারিপোর্টালের জানুয়ারি ২০২১-এর রিপোর্ট অনুযায়ী জাপানে ১১৭.৪ মিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, যা তাদের মোট জনসংখ্যার ৯৩ ভাগ। আর মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০১.১ মিলিয়ন। ২০২০ সালে ৮টি ক্যাটাগরিতে যেমন ভ্রমণ ও বাসস্থানে ৩১.০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, খাবার ও ব্যক্তিগত সুরক্ষাতে ২৫.৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ফ্যাশন ও বিউটিতে ২৩.৯৩ মার্কিন ডলার, শখ বিষয় প্রোডাক্টে ১৯.৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ইলেকট্রনিক্স ও ফিজিক্যাল মিডিয়াতে ১৮.৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ভিডিও গেমসে ১৬.৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ফার্নিচার ও যন্ত্রপাতিতে ১৬.৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ডিজিটাল মিউজিকে জাপানের মানুষ ১.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেন। ৯৭.০৬ মিলিয়ন জাপানিজ ২০২০ সালে ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রোডাক্ট ক্রয় করেন এবং বছরে গড়ে জাপানের প্রত্যেক নাগরিক ১,০৭৮ মার্কিন ডলারের প্রোডাক্ট অনলাইনে কিনেন। ১৫.৯ ভাগ জাপানিজ ‘DOORDASH’ এবং ‘DELIVEROO’র মাধ্যমে অনলাইনে ফুড ডেলিভারি অর্ডার করেন এবং অনলাইন ফুড ডেলিভারি ব্যবসা ৩.১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল, যার মধ্যে ফুড ডেলিভারি গ্রহণ করা প্রত্যেক ব্যবহারকারীর কাছ থেকে গড়ে ১৪৮ মার্কিন ডলার আয় করে ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠানগুলো। জাপানের দ্য মিনিস্টার অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার অ্যান্ড কমিউনিকেশন জরিপে উল্লেখ করে, ২০১৮’র জানুয়ারির তুলনায় ২০২০’র জানুয়ারিতে ১৩.৭ ভাগ অনলাইন কেনাকাটা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই সময়ে গৃহস্থালি কেনাকাটা অনলাইনে ৩৬.৩ ভাগ থেকে বেড়ে ৪২.৮ ভাগ দাঁড়িয়েছে। জাপানের ই-কমার্স খাতের ওপর করা ‘ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনাল ২০২১’র রিপোর্ট হিসেবে, জাপানে ২০২৫ সালে ক্রস বর্ডার ই-কমার্স মার্কেট ১৫১,০৯২.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অভ্যন্তরীণ ই-কমার্স মার্কেট ১৪৬,১৮১.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বৈদেশিক ই-কমার্স ৪,৯১০.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মোবাইল ই-কমার্স ৭৪,৩৩৭.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে। ‘ই-কমার্স ডিবি’র ২০২০ সালে আয়ের ওপর ভিত্তি করে জাপানের ই-কমার্স ক্যাটাগরিকে ৫ ভাগে বিভক্ত করেছে; খাদ্য ও ব্যক্তিগত সুরক্ষায় জাপানে ই-কমার্স খাতে আয় ২৫ ভাগ, ফ্যাশনে ২১ ভাগ, শখে ২০ ভাগ, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড মিডিয়ায় ১৯ ভাগ এবং ফার্নিচার খাতে ১৫ ভাগ আয় করে। শিপিং সার্ভিসে ইয়ামাটো ৫৭ ভাগ, সাগাওয়া এক্সপ্রেস ৪৫ ভাগ এবং জাপান পোস্ট ২৩ ভাগ ই-কমার্স প্রোডাক্ট সরবরাহ করে।     


ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে ৮৮.৩৯ মিলিয়ন জাপানি মানুষ ২০২০ সালে অনলাইনে পেমেন্ট প্রদান করে এবং বাৎসরিক ডিজিটালনির্ভর পেমেন্ট ১৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের হয়। অপরদিকে, ৫৫৩.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রাইড শেয়ারিং ২০২০ সালে জাপানে মার্কেট ছিল এবং গড়ে প্রতি ব্যবহারকারী থেকে ২২০ মার্কিন ডলার আয় করে রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলো। আর ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে জাপান বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম মার্কেট, জাপানে ২০২০ সালে ১৬.২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করা হয়, যার মধ্যে ডিজিটাল সার্চ বিজ্ঞাপনে ৬.৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপনে ৩.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ডিজিটাল ব্যানার, ভিডিও এবং ক্লাসিফাইড বিজ্ঞাপনে যথাক্রমে ২.৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২.৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ১.৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করা হয়। ফিন্যান্সিয়াল ইনভেস্টমেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘জেপি মরগ্যান’র তথ্যে, জাপানের ই-কমার্স ব্যবসায় ফ্রড বা প্রতারণার হার সবচেয়ে কম, যা প্রায় ০.১ ভাগের সমান। ‘জেপি মরগ্যান’র ২০১৯ সালের পেমেন্ট ট্রেন্ড অনুযায়ী ক্যাশ পেমেন্ট জাপানে এখনো উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইট থেকে প্রোডাক্ট ক্রয় করায়। ১৩ ভাগ জাপানি নাগরিক অনলাইনে কেনাকাটাতে নগদ অর্থের মাধ্যমে কেনাকাটা করেন এবং কার্ড ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ৬৫ ভাগ জাপানিজ অনলাইনে প্রোডাক্ট কিনেন, অর্থাৎ অর্থের পরিমাণে সেটা প্রায় ৯৭.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে ১৪ ভাগ ই-কমার্স লেনদেন হয় জাপানে, ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে ২ ভাগ এবং অন্য মাধ্যমে ই-কমার্স প্রোডাক্ট ক্রয়ে লেনদেন ৬ ভাগ সম্পন্ন হয়। ‘জেপি মরগ্যান’র ২০১৯ সালের জাপানের ‘ই-কমার্স মেথড’ নিয়ে পর্যালোচনায় দেখা যায়, মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে ৩৬.৬ বিলিয়ন ব্যবসা সম্পন্ন হয়, যার মধ্যে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারে ১৬.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ব্রাউজার দিয়ে মোবাইল কমার্সের অধীনে ২০.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিক্রি সম্পন্ন হয়।           


জাপানের ই-কমার্স ট্রেন্ড 


জাপানের ক্রেতারা স্বল্পমূল্যের প্রোডাক্ট ইন্টারনেটের মাধ্যমে কিনতে চান এবং ৪৫ ভাগ প্রোডাক্ট মূল্য বেশ সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়। 

ক্রেতারা প্রোডাক্ট সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জানতে আগ্রহী। 

বয়স্ক ব্যক্তিরা মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইন শপিং করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। 

অনলাইন বিক্রেতাদের কাছে জাপানের নাগরিকদের প্রত্যাশা নিয়মিত বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

কোভিড-১৯ জনিত কারণে জাপানের মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালি কেনাকাটা এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা জনিত প্রোডাক্টে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করছে।   


জনপ্রিয় কয়েকটি ই-কমার্স ব্যবসা জাপানে   


ই-কমার্স খাতে জাপানের অগ্রগতি বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে অবস্থান করায় এবং অনলাইনে প্রোডাক্ট কেনায় জাপানিদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও সময় সাশ্রয় করার মন থাকাতে জাপানিদের নিজস্ব মালিকানাধীন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সাথে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানও জাপানে ব্যবসা পরিচালনাতে সফল হচ্ছে।      


অ্যামাজন জাপান 


২০০০ সালের অক্টোবরের ৩১ তারিখে বিশ্বের জায়ান্ট ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘অ্যামাজন’ তাদের যাত্রা শুরু করে জাপানে ‘অ্যামাজন জাপান’ নামে। ধসধুড়হ.পড়.লঢ়-এর কার্যক্রম জাপানে শুরুর আগে সেখানে প্রায় ১৯৩,০০০ মতো ক্রেতা অ্যামাজনের ছিল এবং বছরে ৩৪ মিলিয়ন ডলারের মতো প্রোডাক্ট বিক্রি সম্পন্ন হতো। ২০২১ সালে ৪৪ ভাগ মার্কেট শেয়ার নিয়ে জাপানের প্রথম সারির ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্তমানে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিটুসি (বিজনেস টু কনজ্যুমার) ব্যবসায়িক মডেলে কমিশন, সাবস্ক্রিপশন, ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জাপান অ্যামাজন তাদের ব্যবসায়িক কাঠামো পরিচালনা করছে। ২০২০ সালে ‘অ্যামাজন জাপান’ ১২.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে। অ্যামাজন জাপানের প্রতি মাসে গড়ে ২০২১ সালে ৬৩৬.৯৬ মিলিয়ন ভিজিটর ওয়েবসাইটে আসে। জাপানে অ্যামাজনের বেশিরভাগ প্রোডাক্ট ডেলেভারির ৯৫ ভাগ পরের দিনের মধ্যেই সম্পন্ন হয়।      


রাকুটেন 


জাপানি শব্দ রাকুটেনের অর্থ ‘আশাবাদ’। টোকিওভিত্তিক অনলাইন খুচরা বিক্রয় কোম্পানি ‘রাকুটেন ইনকরপোরেটেড’ ১৯৯৭ সালে হিরোশি মিকিটানি প্রতিষ্ঠা করে। প্রতিষ্ঠানটিকে অনেকে ‘জাপানের অ্যামাজন’ বলে আখ্যায়িত করে। রাকুটেনের ইন্টারনেট পরিষেবা, ব্যবসায় প্রযুক্তি ও মোবাইলের মাধ্যমে তিন বিভাগের অধীনে ৭০টির অধিক পরিষেবা চালু আছে। ই-বাণিজ্য (রাকুটেন ইছিবা, রাকুটেনডটকম, রাকুটেনডটকোডটইউকে, রাকুটেনডটএফআর), রাকুটেন ডেলেভারি, ভ্রমণ বুকিং, অনলাইন ক্যাশব্যাক, রাকুটেন টিভি, কোবো ইনকরপোরেটেড, রাকুটেন অ্যাডভার্টাইজিং, ডিজিটাল ওয়ালেট, ব্যাংকিং অ্যান্ড সিকিউরিটিজ, ম্যাসেজিং অ্যাপ ভাইবার, রাকুটেন মোবাইলের মতো অনেক প্রযুক্তি সেবা রাকুটেনের অধীনে আছে। ২০১৯ সালে ফোর্বসের শীর্ষ ১০০ ডিজিটাল সংস্থার মধ্যে রাকুটেন স্থান পায়। রাকুটেন ই-কমার্স বিটুসি (বিজনেস টু কনজ্যুমার) ও সিটুসি (কনজ্যুমার টু কনজ্যুমার) বিজনেস মডেল ব্যবহার করে সরাসরি ক্রেতার কাছে ইলেকট্রনিক্স, পোশাক, গৃহস্থালি জিনিসপত্র, সরঞ্জামাদি, প্রসাধনী এবং আরও বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রোডাক্ট বিক্রি করে। ২০২১ সালে রাকুটেন ই-কমার্স সাইটটিতে rakuten.co.jp

 

প্রতি মাসে গড়ে ৫৬২ মিলিয়ন ভিজিটর আসে; রেজিস্ট্রেশন ফি, মাসিক সাবস্ক্রিপশন ফি, কমিশন ফি এবং সেল ফি বিজ্ঞাপন ও পার্টনারশিপের মাধ্যমে ক্রেতার কাছে পৌঁছায়। ২০১৪ সালে তাদের প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠান ‘ফ্রিল’কে নিয়ে একীভূত হয় এবং কেনাবেচার প্রতিষ্ঠান ‘রাকুমা’ নামে ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠা করে, যা মোবাইল কমার্সের মাধ্যমে জাপানে সুবিস্তৃত জায়গা করে নিয়েছে। রাকুটেন ১৮,৩৬৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে ২৯টি দেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে, যাদের ২০২০ সালে নেট আয় ছিল ১১৫.৮৪ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন এবং জাপানে ই-কমার্স ব্যবসার ৪২ ভাগ রাকুটেনের নেতৃত্বে রয়েছে।            


ইয়াহু অকশন জাপান  


বাণিজ্যিকভাবে সস্তায় প্রোডাক্ট কেনার অনলাইন নিলামের জন্য মার্কেট অ্যাপ ণধযড়ড়! অঁপঃরড়হং ঔধঢ়ধহ সর্ববৃহৎ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম। এই অ্যাপের মাধ্যমে গতানুগতিক ধারাতে ইয়াহু শপিং সাইটে যেসব প্রোডাক্ট পাওয়া যায় না, সেগুলো জাপানের মানুষ ইয়াহু অকশন জাপানে  সিটুসি (কনজ্যুমার টু কনজ্যুমার) প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কিনতে পারেন। সাইটটিতে প্রতি মাসে গড়ে ১৩৫ মিলিয়ন মানুষ ভিজিট করেন। একটি সেল বা বিক্রয় ফিচার আছে যা সেলার বা বিক্রেতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, এবং কাস্টমারদের নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী প্রোডাক্ট auctions.yahoo.co.jp সাইট থেকে দ্রুত নির্বাচন করতে সহায়তা করে। বই, মিউজিক, কমপিউটার, বিউটি, ফ্যাশন, ভিডিও গেম, গৃহস্থালির মতো জিনিসপত্র বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিশ্বজুড়ে যেকেউ কিনতে পারবেন। ১৯৯৯ সালে জাপানে ‘ইয়াহু অকশন’ অনলাইনে চালু হয়, আমেরিকান ইন্টারনেট কোম্পানি ‘ইয়াহু’ এবং জাপানিজ কোম্পানি ‘সফটব্যাংক’ যৌথভাবে জাপানে এর যাত্রা শুরু করে।     


ইয়াহু জাপান শপিং  


ইয়াহু জাপান কর্পোরেশনের একটি শাখা ইয়াহু জাপান শপিং shopping.yahoo.co.jp, যা আমেরিকার ইন্টারনেট কোম্পানি ‘ইয়াহু’ এবং জাপানিজ কোম্পানি ‘সফটব্যাংক’র যৌথ উদ্যোগে গঠিত। সিয়োডা টোকিওতে প্রধান কার্যালয়ে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটি কসমেটিকস, ইলেকট্রনিক্স, অ্যাপারেল এবং গৃহস্থালির মতো জিনিসপত্র বিক্রি করা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতি মাসে গড়ে ৯০.০৪ মিলিয়ন ভিজিটর আসে, কোম্পানিটি বিক্রির ওপর কমিশননির্ভর ৬ ভাগ মার্কেট জাপান জুড়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে।          


মারকেরি 


২০১৩ সালে জাপানে ‘মারকেরি’ মার্কেটপ্লেস অ্যাপটি যাত্রা শুরু করে, যা মানুষকে নিজেদের প্রোডাক্ট কেনাবেচা করতে সহযোগিতা করে। জনপ্রিয় সব ব্র্যান্ডের জামাকাপড়, ইলেকট্রনিক্স প্রোডাক্ট, স্মার্টফোনের মতো প্রোডাক্টগুলো লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মটিতে প্রোডাক্ট প্রদর্শনী হয় এবং প্রোডাক্টের জন্য নগদ অর্থ গ্রহণ করতে পারে। জাপানে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনার পর ২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, ২০১৬ সালে ইউকেতে তাদের কার্যক্রমের বিস্তৃতি ঘটায়। mercari.com/jp সাইটে বর্তমানে প্রতি মাসে ৭০.৩ মিলিয়ন ভিজিটর সাইট ভিজিট করেন এবং নিয়মিত প্রতি মাসে ১০ বিলিয়ন জাপানি ইয়েন মার্কেটপ্লেসটিতে লেনদেন হয়। মারকেরি অ্যাপ্লিকেশন বিশ্বব্যাপী ১০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ ডাউনলোড করেছেন।         


ডিএমএম 


জাপানিজ ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ও ইন্টারনেট কোম্পানি ‘ডিএমএম’ ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ডিএমএম ডিজিটাল প্রোডাক্ট যেমনÑ ই-বুক, অনলাইন গেমস, এডুকেশন সার্ভিস, ভিডিও অন ডিমান্ড, মেইল অর্ডার, অনলাইন রেন্টালের মতো পরিষেবা দেয়। ডিএমএমের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সোলার প্যানেল, থ্রিডি প্রিন্টিং সেবা বিস্তৃত করেছে। ফসস.পড়স সাইটটিতে প্রতি মাসে ৭৩.৪ মিলিয়ন ভিজিটর আসেন। কেইশি ক্যামিইয়ামা জাপানি প্রতিষ্ঠান ‘ডিএমএম’ প্রতিষ্ঠা করে।    


অনলাইনে প্রোডাক্ট কেনাকাটা বিশ্বে জনপ্রিয় একটি ট্রেন্ড, আর ই-কমার্স ব্যবসায় জাপানের ভবিষ্যৎ সেই ক্ষেত্রে বেশ ভালো সম্ভাবনাময়। প্রোডাক্ট অনলাইনে কেনা থেকে শুরু করে সেটা সাপ্লাই, ডিজিটাল অর্থ লেনদেন, যোগাযোগ কাঠামো, মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রোডাক্ট কেনায় অভ্যস্ততা সবই জাপানে প্রতিনিয়ত অগ্রগতি হচ্ছে। পাশাপাশি জাপানের নিয়মিতভাবে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কল্যাণে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত প্রসারিত ই-কমার্স দেশের মধ্যে জাপানের নাম আসে।








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।