https://powerinai.com/

সাম্প্রতিক খবর

মিথ্যাচারের যুগে বিশ্বাস কেন প্রতিযোগিতামূলক সুবিধার মূল স্তম্ভ: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট

মিথ্যাচারের যুগে বিশ্বাস কেন প্রতিযোগিতামূলক সুবিধার মূল স্তম্ভ: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট মিথ্যাচারের যুগে বিশ্বাস কেন প্রতিযোগিতামূলক সুবিধার মূল স্তম্ভ: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
 

আজকের দ্রুত পরিবর্তনশীল ডিজিটাল বিশ্বে, তথ্যের বিস্তার অনেক সময় তার সঠিকতার চেয়ে দ্রুত ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে, প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করতে পারে যে তারা তাদের নিজস্ব ন্যারেটিভ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, কিন্তু এসব ন্যারেটিভ পাবলিক পারসেপশনের দ্বারা পরিবর্তিত হতে পারে। বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া জনমত গঠনে বিশাল ভূমিকা পালন করে, বিশ্বাস এবং reputation ম্যানেজমেন্টের গুরুত্ব আজকাল অনেক বেড়ে গেছে।

একসময়, একটি প্রতিষ্ঠান তার reputation তৈরি করতে বছরব্যাপী নিষ্ঠা এবং ধারাবাহিক ফলাফল প্রদর্শন করত। কিন্তু আজকের দিনে, প্রতিষ্ঠানগুলোর reputation দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং এটি এখন পাবলিক পারসেপশনের উপর নির্ভর করে। নেতিবাচক ন্যারেটিভ তৈরি হতে পারে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে, যা প্রাথমিকভাবে বিভ্রান্তি বা অতিরঞ্জিত দাবি হতে পারে। এর মানে হচ্ছে, তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করা আজ আগের চেয়ে অনেক বেশি জরুরি।

বাংলাদেশে, যেখানে অপ্রত্যাশিত খবর শেয়ার করার প্রবণতা বেড়ে গেছে, misinformation প্রমাণিত তথ্যের তুলনায় অনেক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। disinformation এখন একটি বৃহৎ অর্থনৈতিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে মিথ্যা দাবি সিস্টেম্যাটিকভাবে তৈরি এবং প্রচারিত হয়। বাংলাদেশের ব্যবসাগুলোর জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ এ ধরনের পরিবেশে একটি শক্তিশালী reputation বজায় রাখা শুধুমাত্র সত্যের প্রতি আস্থা রাখার মাধ্যমে নয়, বরং সক্রিয়ভাবে তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সম্ভব।

এখন বাংলাদেশে, যেখানে জনগণের মনোভাব দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে, একটি প্রতিষ্ঠানের শক্তিশালী reputation বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এটি বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করে, গ্রাহক সম্পর্ক দৃঢ় করে এবং নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে বিশ্বাস তৈরি করে। দুর্ভাগ্যবশত, অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও reputation ম্যানেজমেন্টকে একটি গৌণ বিষয় হিসেবে দেখছে, এবং এটি কেবল একটি সংকটের সময়েই গুরুত্ব পাচ্ছে।

সম্প্রতি একটি বড় কোম্পানির উদাহরণ দেখা গেছে, যেখানে প্রশাসনিক বিষয়ে অপ্রমাণিত অভিযোগ সামনে আসার পর সেগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এবং কোম্পানির শেয়ার মূল্য দ্রুত পড়ে যায়, কোম্পানি কোনও প্রতিক্রিয়া জানানোর আগেই। এই দেরি থেকে বোঝা যায়, সময়মতো সঠিক যোগাযোগের প্রয়োজন কতটা জরুরি। দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো হলে মিথ্যা দাবিগুলোর প্রভাব কমানো সম্ভব হতে পারত।

এ ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য, প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও সক্রিয় যোগাযোগ কৌশল গ্রহণ করতে হবে। নীরবতা অনেক সময় গুঞ্জনের জন্ম দেয়, তাই প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনমতের মধ্যে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করার জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে। এর জন্য প্রমোটারদের প্রশিক্ষণ, সঠিক যোগাযোগ প্রটোকল তৈরি করা এবং কর্মীদের মধ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক মনোভাব তৈরি করা জরুরি। বাংলাদেশে, যেখানে ডিজিটাল পরিবেশ দিন দিন আরো প্রভাবশালী হয়ে উঠছে, প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই জায়গায় দক্ষ হতে হবে।

আজকের কার্যকরী যোগাযোগকারী শুধুমাত্র মুখপাত্র নয়; তারা একজন কৌশলী, বিশ্লেষক এবং মানব আচরণের সঠিক পর্যবেক্ষক। তাদের জানতে হবে কীভাবে ন্যারেটিভ তৈরি হয়, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যালগোরিদমগুলি কিভাবে মানুষের আবেগকে প্রভাবিত করে এবং কীভাবে একটি প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট মুহূর্তে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি বা হারাতে পারে। উদ্দেশ্য হল সংকট মোকাবেলার পরিবর্তে তা প্রতিরোধ করা।

যেকোনো যোগাযোগ কৌশলের মূল লক্ষ্য হল বিশ্বাস তৈরি করা। এই বিশ্বাস শুধুমাত্র স্লোগান বা প্রেস রিলিজের মাধ্যমে তৈরি হয় না, বরং এটি প্রতিষ্ঠানের কাজের মধ্যে সঙ্গতি, স্বচ্ছতা এবং অখণ্ডতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়। যে প্রতিষ্ঠানগুলি সংকট এবং সফলতার উভয় ক্ষেত্রেই সৎ থাকে, তারা সত্যের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে এবং দীর্ঘমেয়াদী বিশ্বাস তৈরি করে।

স্ট্র্যাটেজিক যোগাযোগ বাংলাদেশে এই মূলনীতিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। স্বচ্ছতা, বিনিয়োগকারী সংলাপ এবং বিশ্বাসযোগ্য CSR উদ্যোগগুলি শুধুমাত্র নিয়মনীতি নয়; এগুলি প্রতিষ্ঠানগুলোর সততা প্রদর্শন করে। যেসব প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার এবং ধারাবাহিকভাবে যোগাযোগ করে, বিশেষত অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে, তারা তাদের reputation রক্ষা করে এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জের জন্য এক ধরনের গুডউইল তৈরি করে।

Reputation ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি বিভাগের একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা হওয়া উচিত। HR থেকে শুরু করে কাস্টমার সার্ভিস, আইনি বিভাগ পর্যন্ত সবাই পাবলিক পারসেপশনে প্রভাব ফেলে। আজকের প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে, প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি বিশ্বাসের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে যা শুধুমাত্র মার্কেটিং কৌশলের মধ্যে সীমাবদ্ধ না হয়ে প্রতিষ্ঠানটির সব স্তরে বিস্তৃত হবে। Reputation একটি প্রতিক্রিয়াশীল হাতিয়ার না হয়ে একটি ধারাবাহিক বিনিয়োগ হিসেবে দেখা উচিত।

যেহেতু misinformation আরও ব্যাপকভাবে ছড়ানোর জন্য প্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, ভবিষ্যতে reputation ম্যানেজমেন্টে প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য সঠিকতা নিশ্চিত করার জন্য নতুন টুলস, স্বচ্ছতা ড্যাশবোর্ড এবং ডিজিটাল সাক্ষরতার ব্যবহার করতে হবে। যে প্রতিষ্ঠানগুলো সততা এবং উদ্ভাবনকে একত্রিত করতে পারবে এবং ডিজিটাল দুনিয়ায় তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখতে পারবে, তারা সফল হবে।

সবশেষে, প্রশ্নটি হবে না যে misinformation তৈরি হবে কি না, বরং তা কিভাবে মোকাবেলা করা হবে। সবচেয়ে সফল প্রতিষ্ঠানগুলি হয়তো সবচেয়ে উচ্চস্বরে বা দৃশ্যমান হবে না, বরং তারা সেই প্রতিষ্ঠানগুলো হবে যারা চাপের মধ্যে থেকেও চিন্তাশীল, বিশ্বাসযোগ্য এবং সৎভাবে যোগাযোগ করে। Reputation হয়তো সত্যের চেয়ে দ্রুত ছড়ায়, কিন্তু সততা হল দীর্ঘমেয়াদী সফলতার ভিত্তি।

 এএইচএম. বজলুর রহমান

ডিজিটাল গণতন্ত্র উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশে দায়িত্বশীল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (RAI) অ্যাম্বাসেডর








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।