https://comcitybd.com/brand/Havit

ইন্টারনেট

আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ বিশ্বসেরা হওয়ার পথে

আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ বিশ্বসেরা হওয়ার পথে আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ বিশ্বসেরা হওয়ার পথে
 

আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ বিশ্বসেরা হওয়ার পথে


আউটসোর্সিং হচ্ছে একটি ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়ায় একটি কোম্পানি অন্য একটি কোম্পানিকে বা ব্যক্তিকে নিয়োগ করে এমন কোনো কাজ করার জন্য, যা সাধারণত আগে কোম্পানিটি এর নিজস্ব লোক দিয়েই সম্পাদন করত। কোনো কোম্পানি সাধারণত এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করে কোম্পানির খরচ কমিয়ে আনার জন্য। অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়। তবে আজকের দিনে আউটসোর্সিং সবচেয়ে বেগবান তথ্যপ্রযুক্তির খাতে। তাই আজকাল আউটসোর্সিংয়ের নাম শুনলেই তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আউটসোর্সিং সবার আগে চোখে ভাসে। এখানে আউটসোর্সিং বলতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আউটসোর্সিংকেই বুঝব। বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আউটসোর্সিংয়ে অসাধারণ অগ্রগতি সাধন করছে। এ ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সুখবর হচ্ছে, বিশ্বে বাংলাদেশ আউটসোর্সিংয়ে শিরোপা অর্জন তথা বিশ্বসেরা হওয়ার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। এটি গোটা জাতির জন্য এক আশা জাগানিয়া খবর।


জানা গেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো দেশগুলোকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এখন আউটসোর্সিংয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এ খাতে ২০ লাখ কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা থাকলেও নিবন্ধিত আছেন সাড়ে ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার। আমাদের ফ্রিল্যান্সারেরা বিক্রয় ও বিপণন সেবায় এগিয়ে রয়েছেন। এ খাতে বাংলাদেশের আয় ১০০ কোটি ডলার হলেও সম্ভাবনা আছে তা ৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছানোর। আগামীতে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপির প্রবৃদ্ধিতে ৫ শতাংশ অবদান রাখবে আউটসোর্সিং। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউট ও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তথ্যে এসব জানা গেছে।


বিশ্বে বছরে ১ ট্রিলিয়ন (১ লাখ কোটি) ডলারের বাজার রয়েছে আউটসোর্সিংয়ের। ভারত এই খাতে আয় করছে ১০ হাজার কোটি ডলার। আর বাংলাদেশ ২০২১ সালে ৫০০ কোটি ডলার আয়ের স্বপ্ন দেখছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা মনে করেন এ ক্ষেত্রে ১০০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে ‘বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, আউটসোর্সিংয়ে গত ২০ বছরে ভালো উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। ফলে এ খাতে আমাদের আয় এখন ১০০ কোটি ডলার। আগামী ২০২১ সালে আমাদের আয় ধরা হয়েছিল ৫০ কোটি ডলার। তবে এ খাতে ভালো করতে হলে অবকাঠামো এবং সুলভ দামে ইন্টারনেট সুবিধা আরো বাড়াতে হবে। শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি নারীদের কর্মসংস্থানেও অবদান রাখছে এই ইন্টারনেটভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং। এ ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোও বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করছে।


ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম প্রকাশিত ‘হাউ দ্য ডিজিটাল ইকোনমি ইজ শেপিং এ নিউ বাংলাদেশ’ শীর্ষক নিবন্ধে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, কম খরচে ও ঝুঁকি বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ উন্নত বিশ্বের অনেক বড় কোম্পানি এখন বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে আউটসোর্সিং করছে। এতে বাংলাদেশ হয়ে উঠছে ফ্রিল্যান্স কর্মসংস্থানের একটি বড় উৎস। ফ্রিল্যান্সিং কাজের মধ্যে কমপিউটার প্রোগ্রমিং থেকে শুরু করে ওয়েব ডিজাইন, কর প্রতিবেদন তৈরি করা ও সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনসহ (এসইও) অনেক কাজই রয়েছে। বিশ্বের বাজার ফ্রিল্যান্সিং হয়ে উঠেছে বাংলাদেশিদের জন্য এক পছন্দের কর্মজীবন। এ দেশের তরুণতরুণীদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং এখন অনেক সহজ হয়ে উঠেছে।


অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের দেয়া তথ্যমতে, অনলাইন শ্রমিক সরবরাহে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। বর্তমানে এ দেশে সাড়ে ৬ লাখ নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। এর মধ্যে ৫ লাখ নিয়মিত কাজ করছেন। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশনের তথ্য অনুযায়ী, এরা বছরে ১০ কোটি ডলার আয় করছেন। অনলাইন শ্রমিক সরবরাহে শীর্ষে রয়েছে ভারত। বিশ্বের ফ্রিল্যান্সিং শ্রমিকের ২৪ শতাংশই ভারতের। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সার বিশ্বের ১৬ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিল্যান্সার বিশ্বের ১২ শতাংশ। একেক দেশ একেক ধরনের আউটসোর্সিং কাজের গুরুত্ব দিচ্ছে। ভারতের ফ্রিল্যান্সারেরা প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কাজ বেশি করছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারেরা বিক্রয় ও বিপণনে এগিয়ে।


ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, আগামী ২০২৩ সালে এ খাতে ৭০০ কোটি ডলারের বিদেশি মুদ্রা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। যার মধ্যে ২৫ শতাংশ আউটসোর্সিং থেকে আসবে বলে প্রাক্কলন করছে সরকার। তিনি বলেন, আউটসোর্সিং নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। আমাদের ডিজিটাল দক্ষতা আরো বাড়াতে হবে। আমরা মনে করি, এ খাতে সরকারের প্রচুর বিনিয়োগ করা দরকার। তা ছাড়া ব্যাংকের হয়রানি কমিয়ে বৈধপথে আউটসোর্সিংয়ের প্রকৃত অর্থ দেশে আসা নিশ্চিত করতে হবে। বাণিজ্যবিষয়ক পত্রিকা ফোর্বসের তথ্যমতে, ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয়ে এগিয়ে থাকা বিশ্বের শীর্ষ দশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। ফ্রিল্যান্সিং আয়ে ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে বাংলাদেশ রয়েছে অষ্টম অবস্থানে। আমরা মনে করি, সঠিক নীতি-সিদ্ধান্ত ও পর্যাপ্ত বিনিয়োগ পেলে এ খাত বাংলাদেশের জন্য বয়ে আনবে প্রচুর বিদেশি মুদ্রা। সে সুযোগ কাজে লাগাতে আমরা যেনো পিছপা না হই।








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।