https://comcitybd.com/brand/Havit

প্রযুক্তি

মহাকাশযান অ্যাপোলো ও কমপিউটার প্রযুক্তি

মহাকাশযান অ্যাপোলো ও কমপিউটার প্রযুক্তি মহাকাশযান অ্যাপোলো ও কমপিউটার প্রযুক্তি
 

মহাকাশযান অ্যাপোলো ও কমপিউটার প্রযুক্তি


কমপিউটার প্রযুক্তি হচ্ছে অ্যাপোলো মহাকাশ অভিযানের অন্যতম বড় ধরনের ও দীর্ঘস্থায়ী এক অর্জন। অ্যাপোলো অভিযানের চাঁদে অবতরণযানে সংযুক্ত সলিড-স্টেট মাইক্রো-কমপিউটার থেকে শুরু করে ফ্লাশিং লাইট ও ম্যাগনেটিক ট্যাপসমৃদ্ধ শক্তিশালী আইবিএম মেইনফ্রেম কমপিউটার ব্যবহার হয়েছে অ্যাপোলো মহাকাশ অভিযানে। চাঁদে পৌঁছুতে আড়াই লাখ মাইলের মতো পথ অতিক্রম করার পর চন্দ্রপৃষ্ঠের নির্দিষ্ট স্থানে অবতরণ করতে নভোচারীরা ব্যবহার করেছেন অ্যাপোলো গাইডেন্স কমপিউটার (এজিস)। এই কমপিউটার রাখা হয়েছিল ছোট স্যুটকেস আকারের একটি বাক্সে। মূল মহাকাশযানের কনসোলের সাথে আলাদাভাবে আটকে রাখা হয়েছিল এর ডিসপ্লে ও ইনপুট প্যানেল। এটি ছিল মিনিয়েচারাইজেশন তথা ক্ষুদ্রায়নের ক্ষেত্রে একটি অনবদ্য মাস্টারপিচ। ম্যাসাচ্যুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) তৈরি এজিসি পরিপূর্ণ হাজার হাজার ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট বা সিলিকন চিপে। নানাভাবে এই নয়া প্রযুক্তিব্যবস্থা অবদান রেখেছিল সিলিকন ভ্যালির অগ্রগতিতে। এজিসির ৭৪ কই ROM এবং ৪ কই জঅগ মেমরির কথা শুনতে আজকের দিনে অতি ক্ষুদ্র বা পুঁচকে মনে হয়। তবু এটি ছিল ১৯৮০- র দশকের সিনক্লেয়ার জেডএক্স স্পেকট্রাম অথবা কমোডর ৬৪ হোম কমপিউটারের সমপর্যায়ের। তখন এজিসি ছিল মনে ছাপ ফেলার মতো একটি ইমপ্রেসিভ মেশিন। ব্যাপক মহাকাশ উড্ডয়নের জন্য তৈরি এই এজিসির সফটওয়্যার কয়েলগুলো হার্ডওয়্যার্ড করা, যাতে এটি ভেঙে পড়তে না পারে। হিউস্টনে ‘ম্যানড স্পেসক্র্যাফট সেন্টারে’র গ্রাউন্ডের জন্য নাসা ৫টি সর্বাধুনিক আইবিএম ৩৬০ কমপিউটার কিনেছিল রিয়েল টাইমে মহাকাশযানের প্রতিটি বিষয় গতি, ট্র্যাজেক্টরি ও সুস্থতা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করার জন্য। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কোনো কিছু অচল হয়ে পড়লে তা সামাল দেয়ার জন্য এই সিস্টেমে একটি স্ট্যান্ডবাই কমপিউটার অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগও রাখা হয়েছিল। অ্যাপোলের পেছনে ব্যাপক কমপিউটিং পাওয়ার থাকা সত্তে ও ঊনবিংশ শতাব্দীর উদ্ভাবকদের কাছে এগুলো সুপরিচিত ছিল। সে সময়ে পকেট ক্যালকুলেটর সূচিত হওয়ার আগে নভোচারীরা সাধারণ ক্যালকুলেশন সম্পাদন করতেন স্লাইডরুল ব্যবহার করে।


কমপিউটার অ্যালাম


নেইল আর্মস্ট্রং যখন চাঁদে অবতরণযানের অবতরণযন্ত্র প্রজ্বালন করেন, ঠিক এর ৫ মিনিট পর কয়েকটি অ্যালার্মের শব্দ তার হেডসেটে গিয়ে পৌঁছে : ‘Program alarm…its a 1202’ এমনটিই জানিয়েছেন আর্মস্ট্রং। আর্মস্ট্রং ও ক্যাপকম চার্লি ডিউক এদের কেউই জানলেন না, এই অ্যালার্মের অর্থ কী। তাদের কথাবার্তায় উদ্বেগ ও সংশয় ছিল তাদের


এই প্রথম চাঁদে অবতরণ এখানেই থামিয়ে দিতে হয় কি-না। কিন্তু হিউস্টনে মিশন নিয়ন্ত্রকেরাও সিমুলেশনে একই ধরনের সতর্ক সঙ্কেত পেয়েছিলেন আরো আগে। ‘আমরা চাঁদের পৃষ্ঠের কাছাকাছিই ছিলাম। কমপিউটার তখন খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। এসব সতর্ক সঙ্কেতে বলা হচ্ছিল : ‘Hey guys, I’m overworked a little bit’।


এখানেই শেষ নয়


অ্যাপোলা মহাকাশযানের মিনিয়েচারাইজেশনে তথা ক্ষুদ্রায়নে অ্যাপোলো গাইডেন্স কমপিউটারই (এজিসি) একমাত্র অবাক করা বিষয়


ছিল না। ধীরস্থিরভাবে কনসোলের ডাটার দিকে তাকিয়ে গাইডেন্স অফিসার স্টিভ বেইলস কাজ অব্যাহত রাখার কথা বলেছিলেন। ‘পরে আমি দেখলাম আসলে তারা চেয়েছিলেন, এসব অ্যালার্ম হবে প্রায়োরিটি সিকার। অতএব কমপিউটার যদি সত্যিকার অর্থে ব্যস্ত হয়ে গিয়ে থাকে, এটি এসব ক্যালকুলেশন পাশে ফেলে রাখবে, যেগুলো আসলে ক্যালকুলেশনের তেমন দরকার নাই’ বলেছেন গ্রিফিন। তিনি বলেন অ্যালার্মে বলা হয়েছিল : ‘Hey I’m too busy and I just kicked off some stuff, so they continued their descent| তিনি আরো বলেন : ‘ভূমিতে শুধু মিশন নিয়ন্ত্রকেরাই থাকেন না। আমাদের রয়েছে এমআইটির লোকও, যারা অনলাইনে আমাদের কথোপকথন শোনেন। শুধু ২০ জন নিয়ে অথবা কন্ট্রোল রুমের লোক ও তিনজন নভোচারী নিয়ে আমরা তা করতে পারতাম না। প্রচুর লোককে আমাদের সহায়তা করতে হয়, এটি একটি বড় টিমের উদ্যোগ।’


উপগ্রহটির ওজন ছিল ৩৯ কেজি


অ্যাপোলো থেকে উৎক্ষেপিত উপগ্রহটির ওজন ছিল ৩৯ কেজি। চাঁদের চারপাশে কক্ষপথে দুটি মহাকাশযান : কমান্ড মডিউল ও ল্যান্ডার থাকলেও তবে তা অ্যাপোলো ১৫-র জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। নাসা আরেকটি যুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়। অ্যাপোলো ১৫ ছিল নাসার প্রথম জে-ক্লাস মিশন এবং সেই সাথে এটি ছিল প্রথম লোনার রোভার। এতে ছিল পাশে থাকা ইকুইপমেন্ট বে-সহ একটি সউপডআপ কমান্ড মডিউল। এর সাথে সংযুক্ত ছিল চন্দ্রযানের কক্ষপথ থেকে চাঁদের ওপর পরীক্ষা চালানোর ব্যবস্থা। শেষদিকে করা পরীক্ষাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আরেকটি মহাকাশযান উৎক্ষেপণ। আসলে এটি ৩৬ কেজি বা ৭৯ পাউন্ড ওজনের একটি ষড়ভুজী উপগ্রহ। এটি ডিজাইন করা হয়েছে চাঁদের চারপাশে একটি কক্ষপথে আরো এক বছর প্রদক্ষিণ করার উপযোগী করে। এটি আকর্ষণ বল, চার্জড পার্টিকল ও পৃথিবীর চুম্বকক্ষেত্রের পরিমাপ ও তথ্য-উপাত্ত পাঠাবে। কক্ষপথে ৭৪তম প্রদক্ষিণ শেষে


পৃথিবীতে ফিরে আসার ঠিক আগে অ্যাপোলো ১৫-র ক্রুরা প্রস্তুতি নিয়েছিলেন মহাকাশযানটি উৎক্ষেণের জন্য। উপগ্রহটি পতনের আগে ৬ মাস ধরে পৃথিবীতে উপাত্ত পাঠিয়েছিল। এটি সফল ছিল ১৯৭২ সালের এপ্রিলের অ্যাপোলো ১৬-র ক্রুদের পাঠানো উপগ্রহর মতোই। যেহেতু এটি উৎক্ষেপিত হয়েছিল নিচু কক্ষপথে, তাই দ্বিতীয় উপগ্রহটি চন্দ্রপৃষ্ঠে ভেঙে পড়ার আগে স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ৬ সপ্তাহ।


স্যাটার্ন ভি কমপিউটারের ব্যাস ২২ ফুট


অ্যাপোলো গাইডেন্স কমপিউটার যদি মিনিয়েচারাইজেশনের জন্য চিত্তাকর্ষক হয়ে থাকে, তবে স্যাটার্ন ভি মুন রকেট নিয়ন্ত্রণকারী কমপিউটারকে বিবেচনা করতে হবে এ পর্যন্ত মহাকাশে উৎক্ষেপিত সবচেয়ে বড় কমপিউটার। রকেটটির উপরের তৃতীয় স্তরে একটি আংটা দিয়ে আটকানো স্যাটার্ন ভি ইনস্ট্রুমেন্ট ইউনিটটি ছিল ব্যাপক। আলাবামার হান্টসভিলির ওয়ার্নহার ভন ব্যারুনের রকেটারি টিমের ডিজাইন করা এই কমপিউটারটি তৈরি করে আইবিএম। বাস্তবে এই কমপিউটার এ মেইনফ্রেম কমপিউটার মহাকাশে উৎক্ষেপণ ও এরপর পরিত্যক্ত করা আর এই কমপিউটার উৎক্ষেপণ ছিল একই কথা। একটি হালনাগাদ সলিড-স্টেট সিলিকন চিপের টেকনোলজির সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট করা সত্তে¡ও ইনস্ট্রুমেন্ট ইউনিটের গাইরস্কোপিক গাইডেন্স সিস্টেম ডিজাইন করা হয়েছিল রকেটটিকে স্থিতিশীল ট্র্যাজেক্টরির মধ্যে রাখার জন্য। এটি তৈরি হয়েছিল দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ-সময়ের ভন ব্যারুনের ডেভেলপ করা ভি২ মিসাইলের প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে। অ্যাপোলো ১২ উৎক্ষেপণের সময় বজ্রপাতের আঘাতের শিকার হয়। এর ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় কমান্ড মডিউলে। মিশন নিয়ন্ত্রকেরা মনে করেন, রকেটের কমপিউটারের বৃত্তাকার ডিজাইন একে পাওয়ার সার্জ থেকে রক্ষা করে








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।