https://comcitybd.com/brand/Havit

ইন্টারনেট

ফেসবুকে হাঁসফাঁস

ফেসবুকে হাঁসফাঁস ফেসবুকে হাঁসফাঁস
 

ফেসবুকে হাঁসফাঁস


অক্টোবরে সমস্যা যেনো অক্টোপাসের মতো জাপটে ধরেছে অনলাইন সোশ্যাল জায়ান্ট ফেসবুককে। একদিকে কারিগরি ত্রুটি, অন্যদিকে গোপন তথ্য ফাঁস এই দুইয়ে অনেকটাই নাস্তানাবুদ অবস্থা মার্ক জাকারবার্গের। শেয়ার দরের পতনের পাশাপাশি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে জাকারবার্গের এখন হাঁসফাঁস দশা। 


নাটের গুরু হাউগেন


ফেসবুকের তথ্য ফাঁস করে রীতিমতো বোমা ফাটিয়েছেন অনেকবার। তবে এতদিন পরিচয় প্রকাশ করেননি। এবার আর রাখঢাক না করে প্রকাশ্যে এসেছেন ফ্রান্সেস হাউগেন। মার্কিন টিভি চ্যানেল সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিট’-এ নিজের অভিযোগের সপক্ষে দলিল নিয়ে অংশ নেন ফেসবুকের একসময়ের এই পণ্য ব্যবস্থাপক। ওই নথিগুলো তিনি প্রভাবশালী মার্কিন  দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকেও দেন। তিন সপ্তাহ ধরে সেই নথিগুলো নিয়ে পর্যায়ক্রমে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটি, যা ‘ফেসবুক ফাইলস’ হিসেবে পরিচিতি পায়। প্রতিবেদনগুলোর মধ্যে একটির বিষয় ছিল, তারকা ও রাজনীতিবিদদের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বেলায় ভিন্ন আচরণ করে ফেসবুক। সাধারণ ব্যবহারকারীদের পোস্ট ফেসবুকে অনেক নিয়মনীতির মধ্য দিয়ে গেলেও ভিআইপিরা বরাবরই ছাড় পেয়ে আসছেন। 


আরেকটি নথি থেকে জানা যায়, ফেসবুকের একদল শেয়ারহোল্ডার জটিল এক মামলা করে বসে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। বিনিয়োগকারী ওই দলের অভিযোগ, ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির ব্যাপারটি মিটিয়ে ফেলতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনকে ৫০০ কোটি ডলার দেয় ফেসবুক। এত বড় অঙ্কের অর্থ দেওয়ার কারণ মূলত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গকে ব্যক্তিগত দায় থেকে মুক্তি দেওয়া।


এদিকে ইনস্টাগ্রাম নিয়ে ফাঁস হওয়া অভন্তরীণ গবেষণাটি রাজনীতিবিদদের জন্যও দুশ্চিন্তার কারণ। সেই গবেষণাপত্রে বলা হয়, টিনএজারদের জন্য ইনস্টাগ্রাম ‘টক্সিক’ প্ল্যাটফর্ম। কারণ, তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি।


ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপে অংশ নেওয়া ৩২ শতাংশ কিশোরী বলেছে, ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করায় তারা নিজেদের শরীর সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে শুরু করে। গত সপ্তাহে এক ফেসবুক নির্বাহী ফাঁস হওয়া নথিতে কিশোরদের ওপর ইনস্টাগ্রামের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরা হয়নি বলে মন্তব্য করলেও হাউগেন জানান, জনগণ এবং ফেসবুকের ভালো নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির মধ্যে বরাবরই স্বার্থের সংঘাত ছিল। ফেসবুক বারবার নিজের স্বার্থ দেখেছে, যেমন বেশি অর্থ আয়। এমনকি জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গায় সহিংসতা ছড়াতে ফেসবুক সাহায্য করেছে বলে দাবি করেন হাউগেন। তিনি বলেন, মার্কিন নির্বাচনের সময় ফেসবুক নিরাপত্তামূলক সুবিধাগুলো চালু করেছিল ঠিকই, তবে সীমিত সময়ের জন্য। সাক্ষাৎকারে হাউগেন বলেন, নির্বাচন শেষ হওয়ামাত্র সুবিধাগুলো তারা বন্ধ করে দেয়। অথবা নিরাপত্তার চেয়ে প্রবৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিতে সেটিংস বদলে আগের অবস্থায় নিয়ে যায়, যা গণতন্ত্রের সঙ্গে বেইমানির মতো।


ফেসবুক সেবায় বিভ্রাট, ৬০০ কোটি ডলার ক্ষতি


অফলাইন-অনলাইন মিডয়ায় যখন এসব তথ্য উত্তাপ ছড়াচ্ছিলো তখন হঠাৎ করেই বিপত্তি দেখা দেয় ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামে। আর এই বিভ্রাটও স্থায়ী হয় টানা ছয় ঘণ্টা। এতে মার্ক জাকারবার্গের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ এক ধাক্কায় ৬০০ কোটি ডলারের বেশি কমে যায়। তিনি পিছিয়ে যান বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকাতেও। সম্পদের পরিমাণ কমায় ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার সূচকে জাকারবার্গ এখন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের পেছনে। তার জায়গা হয় পাঁচ নম্বরে। ইয়াহু ফাইন্যান্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য সেপ্টেম্বর থেকেই ফেসবুকের শেয়ারের দর ১৫ শতাংশের মতো কম। সাম্প্রতিক ঘটনায় তা আরও ৪ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গেছে। আর শেয়ারের দর কমায় মার্ক জাকারবার্গের নিট সম্পদের পরিমাণ কমে ১২ হাজার ১৬০ কোটি ডলারে নেমে আসে। ফেসবুকের অ্যাপগুলো ৮ অক্টোবর আবারও দুই ঘণ্টার জন্য বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে এক সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির সেবায় বিশ্বব্যাপী বিঘ্ন দেখা দেয়। এর আগের দিনে মার্কিন সিনেটে ফেসবুকের বিপক্ষে সাক্ষ্য দেন হাউগেন। সাক্ষ্যে ফেসবুকের ব্যবসা কাঠামো ও অ্যালগরিদমের প্রশ্নে হিসেবে মার্ক জাকারবার্গের একচ্ছত্র আধিপত্য, বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে ফেসবুকের মিথ্যাচার, শিশুদের দেখানো বিজ্ঞাপনের প্রশ্নে ফেসবুকের দাবি ও অ্যালগরিদমের কার্যপ্রণালীর অমিল, অ্যালগরিদমের দুর্বলতা, ভবিষ্যতে টিকে থাকতে ফেসবুকের শিশুদের ওপর নির্ভর করার চেষ্টা, এনগেজমেন্ট র্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন তিনি।  


অ্যালগরিদমেও আছে ত্রুটি, শঙ্কা জাতীয় নিরাপত্তায়


ফেসবুক বরাবরই দাবি করে এসেছে যে বিদ্বেষপূর্ণ কনটেন্ট মোকাবেলায় তারা সদা তৎপর, ক্ষেত্রবিশেষে এই কাজে নিজেদের বিশ্বের সেরা বলেও দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু হাউগেনের সরবরাহ করা নথিপত্র বলছে একেবারে ভিন্ন কথা।


এমএসআইয়ের ভিত্তিতে ব্যবহারকারীদের কোন কনটেন্ট দেখাতে হবে বা এনগেজমেন্ট যাংকিংয়ের হিসেবে কোন বিজ্ঞাপন মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেÑ ফেসবুকের এআই এ বিষয়গুলো চিহ্নিত করতে বেশ পারদর্শী হলেও নেতিবাচক কনটেন্ট চিহ্নিত করার বেলায় একেবারেই দুর্বল ফেসবুকের এআই অ্যালগরিদম। হাউগেন বলেন, আক্রমণাত্মক কনটেন্টের ‘খুব সামান্যই ধরতে পারে’ ফেসবুকের এআই অ্যালগরিদম। ‘সত্যিটা হচ্ছে, বড় জোর ১০ থেকে ২০ শতাংশ আক্রমণাত্মক কনটেন্ট ধরতে পারে এআই।’ পাশাপাশি ফেসবুক জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি বলেও মত দেন তিনি। স্বৈরাচারী সরকার বা কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতৃত্ব ফেসবুকের প্ল্যাটফর্মগুলোর সুযোগ নিচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে হাউগেন বলেন, প্ল্যাটফর্মগুলো যে শুধু ব্যবহৃত হচ্ছে তা-ই নয়, ফেসবুক নিজেও জানে এই বিষয়ে। এছাড়া চাকরি ছাড়ার আগে ফেসবুকের কাউন্টার এসপিওনাজ টিমের হয়ে কাজ করেছেন হাউগেন। সেই কাজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার দলটি উইঘুরদের উপর চীনের নজরদারি চালানো অনুসরণ করেছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইরান সরকারের গোয়েন্দাগিরিও নজরে পড়েছে আমাদের।’ হাউগেন আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কার্যক্রম মোকাবেলায় কাউন্টার এসপিওনাজ দলে নতুন কর্মী নিয়োগ দিতে ফেসবুকের গড়িমসি জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু।’ এই প্রসেঙ্গ কংগ্রেসের অন্য সদস্যদের সাথে আলোচনা চলছে জানিয়ে হাউগেন বলেন, ‘ফেসবুক এখন যেভাবে কাজ করে, তার ফলে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত আমি।’ 


ফেসবুকের হাতিয়ার শিশুরা!


তরুণ প্রজন্মের ব্যবহারকারীদের অনেকেই এখন ফেসবুক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। অন্যদিকে একের পর এক কেলেঙ্কারি পিছু ছাড়ছে না ফেসবুকের। এমন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতের গ্রাহক হিসেবে ফেসবুক শিশুদের দিকে নজর দিচ্ছে এবং ইনস্টাগ্রাম কিডসের মতো পণ্য দিয়ে সেই লক্ষ্য পূরণের চেষ্টাও করছে বলে জানিয়েছেন হাউগেন। ফেসবুক আপাতত ইনস্টাগ্রাম কিডস প্রকল্প বন্ধ রাখলেও তা চিরস্থায়ী হবে কিনা বা ফেসবুক এমন পণ্য নির্মাণ বন্ধ করবে কিনা, সিনেটর ব্রায়ান শাটজের এমন প্রশ্নের উত্তরে হাউগেন বলেন, ‘সেটা হলে আমি অবাক হব। তাদের ইউজার লাগবে। বাচ্চারা প্ল্যাটফর্মে এলে, তাদের সাথে তাদের অভিভাবকরাও প্ল্যাটফর্মে আসবেন। আর ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার শিশুদের অভ্যাসে পরিণত করার মাধ্যমে ভবিষ্যতের ব্যবহারকারী নিশ্চিত করতে পারবে তারা।’


হিন্দি ও বাংলা বোঝে না বলেই ফেসবুক মিথ্যা ছড়ায়


ফেসবুক গ্রুপ কিংবা পেজে ব্যবহারকারীরা ‘ভীতিকর ও মুসলিমবিদ্বেষী’ কনটেন্ট ছড়াচ্ছে জেনেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। হিন্দি ও বাংলা শব্দগুলো ঠিকঠাক বুঝতে পারার মতো অ্যালগরিদম না থাকায় ফেসবুক তেমন কনটেন্ট শনাক্ত করতে পারে না বলে মার্কিন নীতিনির্ধারকদের অভিযোগ জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেন। 


যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (এসইসি) ফেসবুকের অসদাচরণ নিয়ে জানানো অভিযোগে অনেক বিষয়ের মধ্যে হাউগেন বলেন, ফেসবুকের ভাষা বুঝতে পারার দক্ষতা সীমিত এবং বিশ্বে ভুয়া তথ্য ও জাতিগত সহিংসতা ছড়ানোর সেটি অন্যতম কারণ।


‘অ্যাডভারসারিয়াল হার্মফুল নেটওয়ার্কস ইন্ডিয়া কেস স্টাডি’ শীর্ষক গোপন নথির উল্লেখ করে মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে হাউগেনের পক্ষে অভিযোগ করে অলাভজনক সংস্থা হুইসেলব্লোয়ার এইড। সেখানে বলা হয়, ‘মুসলিমদের নিয়ে বেশ কিছু অমানবিক পোস্ট ছিল...আমাদের হিন্দি ও বাংলা শব্দ বাছাই করার প্রযুক্তির অভাব থাকায় এই পোস্টগুলোর বেশিরভাগই কখনো চিহ্নিত করা কিংবা এগুলোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ 


দায় অস্বীকার ফেসবুকের


ফেসবুকের দাবি ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ও সহিংসতা ছড়ায়, এমন কনটেন্ট তারা নিষিদ্ধ করেছে। ঘৃণাত্মক কনটেন্ট রিপোর্ট করার আগেই তা শনাক্ত করার প্রযুক্তিতে বছরের পর বছর ধরে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী ৪০টির বেশি ভাষার সাথে হিন্দি ও বাংলায় কনটেন্ট শনাক্তে তারা এখন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। ফেসবুকের দাবি অনুযায়ী গত ১৫ মে থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ভারতীয় ব্যবহারকারীদের প্রায় ৮ লাখ ৭৭ হাজার বিদ্বেষমূলক পোস্ট সরানো হয়েছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা কর্মীর পরিমাণ তিনগুণ বাড়িয়ে ৪০ হাজার করা হয়েছে। তাদের ১৫ হাজারের বেশি কর্মী কনটেন্ট পর্যালোচনার কাজে নিযুক্ত।


জাকারবার্গের পোস্ট


গণমাধ্যম নয়, নিজের তৈরি মাধ্যমে উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে পোস্ট করেছেন জাকারবার্গ। সেখানে সিনেটর অধিবেশনে যে অভিযোগ উঠেছে তার বেশিরভাগের ‘কোনো মানে নেই’ বলে দাবি করেছেন তিনি। ‘আমরা যদি গবেষণায় পাত্তা না দিতে না চাইতাম, তাহলে শিল্পের শীর্ষস্থানীয় গবেষণা প্রকল্প কেন তৈরি করেছি আমরা’ প্রশ্ন তুলেছেন জাকারবার্গ। বলেছেন, লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, সিনেট অধিবেশনেও ফেসবুকের গবেষণা বিভাগের সুনাম গেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী হাউগেন। সিনেট অধিবেশনে গবেষণা প্রকল্পের উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি; প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিকে ফেসবুকের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব ও ফলাফল চেপে যাওয়ার প্রবণতা।  


জাকারবার্গ আরও বলেছেন, ‘সামাজিক মেরুকরণের পেছনে যদি সামাজিক মাধ্যমগুলোর হাত থাকে, তবে আমরা কেন শুধু যুক্তরাষ্ট্র্রে মেরুকরণ দেখতে পাচ্ছি যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি কমে আসছে বা সমান থাকছে?’ জাকারবার্গ নিজস্ব বক্তব্যে দাবি করছেন ফেসবুক যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে রাজনৈতিক বা সামাজিক মেরুকরণে ভূমিকা রাখে না। কিন্তু সিনেট শুনানিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাজনৈতিক বা সামাজিক মেরুকরণ ও সহিংসতায় ফেইসবুকের ভ‚মিকার কয়েকটি উদাহরণ আলোচিত হয়েছে মার্কিন সিনেটর ও হাউগেনের প্রশ্ন-উত্তর পর্বে।


ইথিওপিয়া ও মিয়ানমারে জাতিগত দাঙ্গায় ফেইসবুকের ব্যবহার বা ভ‚মিকা নিয়ে মন্তব্য করেননি জাকারবার্গ। নিজের বক্তব্যে কেবল যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে মেরুকরণের কথা বললেও ২০২০ সালের নির্বাচনের পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, ‘সিভিক ইন্টিগ্রিটি টিম’ কেন ভেঙে দেওয়া হয়েছিল এবং ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিল দাঙ্গায় ফেইসবুকের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি। 


ফেসবুকে গ্রাহকদের নিরাপত্তার বদলে টাকা কামানোকেই বেশি গুরুত্ব দেয় বলে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি ‘সত্যি নয়’ বলে নিজের ফেসবুক পোস্টে উড়িয়ে দিয়েছেন জাকারবার্গ। ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে, ‘যে পদক্ষেপটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে সেটি হলো আমরা যখন নিউজ ফিডে মিনিংফুল সোশ্যাল ইন্টার্যাকশন (এমএসআই) পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলাম। এই পরিবর্তনের ভাইরাল কনটেন্টের বদলে বন্ধু ও আত্মীয়দের কনটেন্ট বেশি দেখাত। এতে মানুষ ফেসবুকে কম সময় দেবে জেনেও আমরা এটি চালু করেছিলাম।’


২০১৮ সালে এমএসআই চালু করার সময়ও প্রায় একই বক্তব্য দিয়েছিলেন জাকারবার্গ। লক্ষণীয় বিষয় লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের বিচারের কনটেন্টের গুরুত্ব নির্ধারণ করে এমএসআই। সিনেট অধিবেশনে হাউগেনের বক্তব্য অনুযায়ী, ফেসবুকের অ্যালগরিদম একদিকে আক্রমণাত্মক কনটেন্ট চিহ্নিত করতে পারে না, পারলেও তা সর্বোচ্চ ২০ শতাংশের বেশি নয়। অন্যদিকে, এমএসআইয়ের বিচারে অ্যালগরিদম যে কনটেন্টগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবহারকারীদের নিউজ ফিডে দেখায়, নেতিবাচক কনটেন্ট চিহ্নিত করতে অ্যালগরিদমের ব্যর্থতার কারণে, ওই কনটেন্টগুলোই ব্যবহারকারীদের আক্রমণাত্মক মনোভাব উস্কে দেয়। ফলে দিন শেষে ব্যবহারকারীর নিউজ ফিডে বন্ধুদের পোস্টের বদলে সহিংসতা ও বিদ্বেষপূর্ণ কনটেন্টই বেশি গুরুত্ব পায়। সহিংস মনোভাব উস্কে দেওয়ার ক্ষেত্রে এমএসআই বা অ্যালগরিদমের ভূমিকা নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেননি জাকারবার্গ।








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।