https://www.brandellaltd.com/

ইন্টারনেট

আইপি অ্যাড্রেসিং

আইপি অ্যাড্রেসিং আইপি অ্যাড্রেসিং
 

আইপি অ্যাড্রেসিং


নেটওয়ার্ক বা নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে কমপিউটার জগৎ-এ অনেকবারই আলোচনা করা হয়েছে৷ কিন্তু এই নেটওয়ার্কিংয়ের সবচেয়ে দরকারি এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ইন্টারনেট প্রটোকল- যার সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে আইপি (IP)৷ দুই বা ততোধিক কমপিউটারের মধ্যে নেটওয়ার্কিং করতে এই আইপি অ্যাড্রেসের প্রয়োজন পড়ে অথবা ইন্টারনেটে সংযোগের ক্ষেত্রেও আইপি অ্যাড্রেসের প্রয়োজন পড়ে৷ প্রতিটি কমপিউটারে একটি ইউনিক আইপি অ্যাড্রেস থাকে বা নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রে প্রতিটি নেটওয়ার্কের কমপিউটারে একটি করে ইউনিক আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার হয়ে থাকে৷ আইপি অ্যাড্রেস দিয়ে নেটওয়ার্কের কমপিউটারকে চেনা যায়৷ এই আইপি অ্যাড্রেস নিয়ে নিচে আলোচনা করা হয়েছে৷


প্রতিটি আইপি অ্যাড্রেস হচ্ছে ৩২ বিটবিশিষ্ট৷ আইপি অ্যাড্রেসকে ডটেট ডেসিমেল পদ্ধতিতে প্রকাশ করা হয়৷ যেমন : 192.168.1.72 এখানে এই আইপি অ্যাড্রেসকে চার ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে কারণ আইপি অ্যাড্রেস চার বাইট বা ৩২ বিট হয় এবং প্রতিটি বাইটের সর্বোচ্চ রেঞ্জ হয় ২৮=২৫৬ অর্থাৎ প্রতি বাইট হচ্ছে ৮ বিট৷


প্রতিটি আইপি অ্যাড্রেসকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়৷


১. নেটওয়ার্ক আইডি (ID) এবং


২. হোস্ট আইডি (ID).


১. নেটওয়ার্ক আইডি :


নেটওয়ার্ক আইডি দিয়ে প্রকাশ করা হয় প্রতিটি আইপি ব্লকে সর্বোচ্চ কতগুলো নেটওয়ার্ক তৈরি করা যাবে৷


২. হোস্ট আইডি :


হোস্ট আইডি দিয়ে প্রকাশ করা হয় প্রতিটি নেটওয়ার্ক আইডিতে কতগুলো করে কমপিউটার বা হোস্টের মাঝে নেটওয়ার্ক স্থাপন করা যাবে৷


আইপি অ্যাড্রেস ক্লাস


আইপি অ্যাড্রেসকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে৷ যেমন : ক. Class A,

খ. Class B,

গ. Class C,

ঘ. Class D,

ঙ. Class E৷


সাধারণত Class A, Class B, Class C আইপি অ্যাড্রেস হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷ আর Class D -কে মাল্টিকাস্ট অ্যাড্রেস এবং Class E -কে রিজার্ভড অ্যাডেস হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷


Class A অ্যাড্রেস


Class A অ্যাড্রেসে ৮ বিট নেটওয়ার্ক অংশ এবং ২৪ বিট হোস্ট অংশ হিসেবে ভাগ করা হয়৷ ৩২ বিট অ্যাড্রেসকে ৪ বাইটে বিভক্ত করা হয়ে থাকে যার প্রথম বাইট দিয়ে চিহ্নিত করা হয় আইপি অ্যাড্রেসটি কোন ক্লাসের৷ Class A -এর ভেলিড (Valid) নেটওয়ার্কঅ্যাড্রেসেররেঞ্জ হচ্ছে ১ থেকে ১২৬৷ অর্থাৎ Class A -এর ১২৬টি নেটওয়ার্কের প্রতিটি নেটওয়ার্কে ১৬,৭৭৪, ২১৪টি ভেলিড হোস্ট ব্যবহার করা যাবে৷ OK নেটওয়ার্ক আইডি হিসেবে ব্যবহার করা যায় না৷ ১২৭-কে লুপব্যাক ফাংশনের রিজার্ভড আইপি হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷


উদাহরণ : 10, 20, 30, 40 এই আইপি অ্যাড্রেসের 10 হলো নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস, আর 20, 30, 40 হলো হোস্ট বা নোড অ্যাড্রেস৷ 10 নেটওয়ার্কের ভেলিড অ্যাড্রেস হচ্ছে 10.0.0.1 থেকে 10.255.255.254৷ এখানে 10.0.0.0 এই অ্যাড্রেসটি নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস এবং 10.255.255.255 এই অ্যাড্রেসটি ব্রডকাস্ট অ্যাড্রেস হিসেবে ব্যবহার হয়৷


Class A -এর প্রথম বাইটের রেঞ্জ সর্বোচ্চ ১২৬৷


Class A -এর ডিফল্ট সাবনেট মাস্ক হলো : ২৫৫.০.০.০৷


Class B অ্যাড্রেস


Class B অ্যাড্রেসে ১৬ বিট নেটওয়ার্ক অংশ এবং ১৬ বিট হোস্ট অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ Class B -এর প্রথম বাইটের রেঞ্জ হচ্ছে ১২৮ থেকে ১৯১ যা বাইনারি হিসেবে প্রকাশ করা হয়ে থাকে৷ Class B -তে সর্বোচ্চ ১৬৩৮৪টি নেটওয়ার্ক এবং প্রতিটি নেটওয়ার্কে ৬৫৫৩৪টি ভেলিড হোস্ট ব্যবহার করা যাবে৷


প্রথম বাইটে ৬৪টি নেটওয়ার্ক আইডি৷ দ্বিতীয় বাইটে ২৫৬টি নেটওয়ার্ক আইডি৷ মোট নেটওয়ার্ক আইডি =৬৪*২৫৬=১৬৩৮৪৷


হোস্ট আইডিতে সব ০ বা ১ হতে পারবে না৷ তাই ২টি হোস্টকে বাদ দিতে হয়৷


মোট হোস্ট আইডি =(২১৬-২)=৬৫৫৩৪


উদাহরণ : Class B - প্রথম বাইটের রেঞ্জ হচ্ছে ১২৮ থেকে ১৯১৷ উদাহরণস্বরূপ Class B -এর একটি আইপি অ্যাড্রেস ধরি, 172. 16.1.80৷ এখানে ১৭২. ১৬ দিয়ে নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস এবং ১. ৮০ দিয়ে হোস্ট বা নোড অ্যাড্রেসকে চিহ্নিত করে৷


Class B -এর প্রথম বাইটের রেঞ্জ সর্বোচ্চ ১৯১ হলেও দ্বিতীয় বাইটের রেঞ্জ ০ থেকে ২৫৫ হতে পারবে৷


তৃতীয় এবং চতুর্থ বাইট দিয়ে Class B -এর হোস্ট অ্যাড্রেসকে বুঝানো হয়ে থাকে৷ উপরের উদাহরণের 172.16.0.0 হলো নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস এবং 172.16.255.255 হলো ব্রডকাস্ট অ্যাড্রেস৷ আর ভেলিড হোস্টের রেঞ্জ হচ্ছে 172.16.0.1 থেকে 172.16.255.254৷


Class B -এর ডিফল্ট সাবনেট মাস্ক : 255. 255.0.0৷


Class C অ্যাড্রেস


Class C অ্যাড্রেসে ২৪ বিট নেটওয়ার্ক আইডি এবং ৮ বিট হোস্ট আইডি হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ Class C -এর প্রথম বাইটের রেঞ্জ ১৯২ থেকে ২২৩ অর্থাৎ Class C -এর প্রথম বাইটে সর্বোচ্চ ৩২টি নেটওয়ার্ক আইডি হতে পারবে৷ পরের দুই বাইটে ২৫৬টি করে নেটওয়ার্ক আইডি হবে৷ মোট নেটওয়ার্ক সংখ্যা =৩২ * ২৫৬ *২৫৬=২০৯৭১৫২৷


Class C -এর হোস্ট সংখ্যা (২৮-২)=২৫৪টি ভেলিডহোস্ট৷ উদাহরণ : Class C -এর প্রথম বাইটের রেঞ্জ হচ্ছে ১৯২ থেকে ২২৩৷ উদাহরণস্বরূপ Class C -এর একটি আইপি অ্যাড্রেস ধরি, 192.168.100.80 যার 192.168.100 হলো নেটওয়ার্ক অ্যাড্রেস এবং ৪০ হলো হোস্ট বা নোড অ্যাড্রেস৷


এই অ্যাড্রেসের নেটওয়ার্ক আইডি হলো 192.168.100.0 এবং ব্রডকাস্ট অ্যাড্রেস হলো 192.168.100.255৷ আর ভেলিড হোস্টের রেঞ্জ হচ্ছে 192.168.100.1 থেকে 192.168.100.254৷


Class C -এর ডিফল্ট সাবনেট মাস্ক : ২৫৫. ২৫৫. ২৫৫.০৷


Class D অ্যাড্রেস


Class D মাল্টিকাস্ট গ্রুপের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে, যার প্রথম বাইটের রেঞ্জ হচ্ছে ২২৪ থেকে ২৩৯৷


Class E অ্যাড্রেস


Class E রিজার্ভ আইপি হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে, যার প্রথম বাইটের রেঞ্জ হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫৫৷ সাধারণত Class A,B,C-এর আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহৃত হয়৷ কোন নেটওয়ার্কে কোন Class-এর আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করতে হবে তা পুরোপুরি নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ওপর নির্ভর করবে৷


পরবর্তী সংখ্যায় সাবনেটিংয়ের সাবনেট মাস্ক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে৷ আইপি অ্যাড্রেসের মতো সাবনেটিং এবং সাবনেট মাস্কও গুরুত্বপূর্ণ৷








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।