https://comcitybd.com/brand/Havit

ইন্টারনেট

গুগল ক্রোম অপারেটিং সিস্টেম

গুগল ক্রোম অপারেটিং সিস্টেম গুগল ক্রোম অপারেটিং সিস্টেম
 

গুগল ক্রোম অপারেটিং সিস্টেম


গুগল নামটি শুনলেই সবার আগে মাথায় আসে গুগলের সার্চ ইঞ্জিনের কথা। গুগলের ব্যাপারে অনেকের ধারণা ছিল এর কার্যক্রম সার্চ ইঞ্জিন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। কিন্তু এ ধারণা ভুল। গুগলের আরো অনেক সৃষ্টি রয়েছে, যার সাথে অনেকেই পরিচিত নন। গুগলের প্রতিটি পণ্য বাজারে সাফল্যের সাথে অন্যদের সাথে টেক্কা দিয়ে যাচ্ছে। গুগলের সবচেয়ে জনপ্রিয় সৃষ্টি হচ্ছে গুগল সার্চ ইঞ্জিন, যা নামকরা সার্চ ইঞ্জিন ইয়াহু ও লাইভকে অনেক পেছনে ফেলে দিয়ে সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে শীর্ষস্থানটি দখল করেছে। যেখানে ইয়াহু ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৫-১৭%, সেখানে গুগল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৭০-৭৪%। গুগলের সাফল্যের পদচারণায় নতুন এক অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে গুগল ক্রোম অপারেটিং সিস্টেমের মধ্য দিয়ে। অনেকটা হঠাৎ করেই গুগল ঘোষণা দিয়েছে তারা সামনের বছরে গুগল ক্রোমের ওপরে ভিত্তি করে তাদের নতুন অপারেটিং সিস্টেম Google Chrome OS মুক্তি দিতে যাচ্ছে। তাদের এই পদক্ষেপ এপল ও মাইক্রোসফটের জন্য দারুণ এক চ্যালেঞ্জের জন্ম দিয়েছে। সবার নজর এখন গুগলের নতুন এই অপারেটিং সিস্টেমের ওপরে। এই ওএস-কে বিনামূল্যে বাজারে ছাড়া হবে। গুগল পণ্যের পরিচিতি সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাক।


গুগলের পণ্যগুলো


গুগলের ডেস্কটপ প্রোডাক্টের তালিকায় রয়েছে- অ্যাডওয়ার্ড এডিটর, গুগল ক্রোম, গুগল ডেস্কটপ, গুগল আর্থ, পিকাসা, গুগল স্কেচআপ, গুগল টক, জি-মেইল ইত্যাদি। মোবাইলের জন্য তাদের রয়েছে- ব্লগার মোবাইল, ক্যালেন্ডার, জি-মেইল, নিউজ, গুগল মোবিলাইজার, আইগুগল ইত্যাদি। ওয়েবের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হচ্ছে- অ্যাড প্ল্যানার, অ্যাড ম্যানেজার, অ্যাডসেন্স, অ্যাডওয়ার্ড, অডিও অ্যাডস, ক্লিক টু কল, ডবল ক্লিক ইত্যাদি। কমিউনিকেশন ও পাবলিশিংয়ের জগতে তাদের কিছু অবদানের মাঝে রয়েছে- থ্রিডি ওয়্যারহাউস, অ্যাপস, ব্লগার, ক্যালেন্ডার, ডকস, ফ্রিবার্নার, ফ্রেন্ড কানেক্ট, গ্যাজেট, প্রোফাইলস, নোটবুক, নোল, অরকুট, পিকাসা ওয়েব অ্যালবাম, রিডার, ভয়েস, ইয়ু টিউব ইত্যাদি। এছাড়াও ডেভেলপমেন্টের কাজে, ম্যাপিংয়ে ও সার্চিংয়ের জন্য, স্ট্যাটিস্টিকের কাজে ব্যবহার করার জন্য গুগলের আরো অনেক পণ্য রয়েছে।


গুগল ক্রোম অপারেটিং সিস্টেম


লিনআক্স প্লাটফর্মে বানানো ওপেনসোর্সের অন্তর্ভুক্ত গুগল ক্রোম অপারেটিং সিস্টেমটি হবে ওয়েবভিত্তিক। এ প্লাটফর্মে ইন্টারনেটে কাজ করার জন্য বিশেষ কিছু সুবিধা দেয়া হবে। ডেভেলপাররা বলছেন, ক্রোমের ক্ষেত্রে ওয়েব হবে অপারেটিং সিস্টেমটির প্লাটফর্ম। ওয়েবভিত্তিক কাজগুলো খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন ও সাজানো থাকবে এতে। তাই যারা বেশি সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এটি হবে আশীর্বাদ। বেশি গ্রাফিক্সের কারুকাজ না করে, খুব ছিমছাম করে এই অপারেটিং সিস্টেমের কাজ করা হয়েছে। ফলে এটি বেশি গতিসম্পন্ন ও দেখতেও ভালো। এর উন্নয়নের কাজ এখনো চলছে। এর একটি বেটা ভার্সন দেয়া হয়েছে শুধু সাধারণ ডেভেলপারদের জন্য, যাতে তারা এর বিভিন্ন ভুলত্রুটি সংশোধন ও নতুন কোনো আইডিয়া যোগ করে তা আরো সমৃদ্ধ করতে পারেন। বেটা গুগল ক্রোম ওএস-এর নাম দেয়া হয়েছে আলফা ভার্সন। তবে এটাই যে তার আসল রূপ, তা নাও হতে পারে। কারণ, এটি এখনো ডেভেলপারদের হাতে রয়েছে। গুগল ক্রোম অপারেটিং সিস্টেমের উইন্ডো, যা হুবহু গুগল ক্রোম ব্রাউজারের মতো। বামপাশে সারিবদ্ধভাবে সাজানো রয়েছে গুগলের কিছু অ্যাপ্লিকেশন, যেমন- গুগল অ্যালার্ট, গুগল বুকস, গুগল ক্রোম ব্রাউজার, জি-মেইল ইনবক্স, পিকাসা, গুগল সার্চ, গুগল নিউজ ইত্যাদি। বামে উপরের দিকে রয়েছে গুগল ক্রোমের লোগো আকৃতির বাটন এবং তার পাশে সাজানো রয়েছে ছবি সম্পাদনার প্রোগ্রাম, ভিডিও ও মিউজিক প্লেয়ার, অ্যালার্ম, ডিজিটাল ঘড়ি ইত্যাদি।


গুগলের এ অপারেটিং সিস্টেমটি বাজারে আসতে পারে ২০১০ সালের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে। গুগলের বানানো আরেকটি জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে অ্যানড্রয়েড। মোবাইলের জন্য বানানো এই ওএস-এর প্রাথমিক উন্নতিকরণের কাজ করেছিলো গুগল, কিন্তু পরে তা ওপেন হ্যান্ডসেট অ্যালিয়েন্স নামের কোম্পানির হাতে পুরোপুরিভাবে বিকাশ লাভ করে। লিনআক্সভিত্তিতে বানানো মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমগুলোর মধ্য অ্যানড্রয়েড অন্যতম। গুগল ক্রোম ওএস মূলত তাদের জন্য বানানো হয়েছে, যারা বেশিরভাগ সময় ইন্টারনেটে বিচরণ করেন এবং যাদের যাবতীয় কাজ ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল।


গুগল ক্রোম ওএসের সুবিধাগুলো


এ অপারেটিং সিস্টেমটি ডিজাইন করা হচ্ছে এমনভাবে যেনো তা খুব দ্রুত বুট করতে পারে এবং কম শক্তিশালী পিসিতে অনায়াসে চালানো যায়। স্বল্প স্থান দখলকারী এ সিস্টেমটি ব্রাউজারের ওপর ভিত্তি করে বানানো। তাই এটি দিয়ে গুগলের বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন দেখা ও তা ব্যবহার করা যাবে। নেটবুকের জন্য বানানো এ অপারেটিং সিস্টেমে কী কী সুবিধা দেয়া হবে, তা এক নজরে দেখা যাক :


নেটবুকগুলোর দাম মোটামুটি কমই হয়ে থাকে একটি ল্যাপটপের তুলনায়। কিন্তু এর পেছনে বেশিরভাগ অর্থ খরচ হয় অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যার বান্ডলের জন্য। তারপরে কম ক্ষমতার এসব নেটবুকে ভারি ওএস কিছুটা ধীরগতিতে চলে। আর সেখানে গুগল দেবে বিনামূল্যে একটি দ্রুতগতির অপারেটিং সিস্টেম এবং সেই সাথে বিশাল এক ফ্রি সফটওয়্যারের ভান্ডার। ফলে এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হবে যে নেটবুকগুলোতে সেগুলোর দাম আরো অনেক কমে যাবে। মোবাইল এখন যেমন সবার হাতে হাতে, ঠিক তেমনি সবার সাথে থাকবে একটি করে নেটবুক।


উইন্ডোজ এক্সপি, ভিসতা, সেভেন বা ম্যাক ওএস যাই বলেন না কেনো সব নেটবুকে যে গতিতে চলে তার চেয়ে আরো দ্রুতগতিতে চলবে এই নতুন অপারেটিং সিস্টেম। প্রসেসরের ক্ষমতা যাই হোক, কম বা বেশি তা কোনো বিষয় নয়। এটি নিম্নমানের পিসিতেও ভালোভাবে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়াও এতে রয়েছে গুগলের বিভিন্ন ধরনের সুযোগসুবিধা। তাদের সবধরনের সার্ভিস যেমন- জি-মেইল, গুগল ডকস, গুগল টক, গুগল ডেস্কটপ, পিকাসা ইত্যাদি সবই এতে যুক্ত করা থাকবে। তাই তা আপনাকে আলাদা করে নেট থেকে খুঁজে বের করতে হবে না। অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমে থাকে কম্প্যাটিবিলিটি বা বিভিন্ন সফটওয়্যার বা হার্ডওয়্যার ইনস্টল করার সময় তা সমর্থনজনিত কিছু সমস্যা। এটি কম্প্যাটিবিলিটি সমস্যামুক্ত এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে তা যথাসময়ে আপডেট বা হালনাগাদ করে নেবে নিজে নিজেই। এতে কিছু জনপ্রিয় ও প্রচলিত সফটওয়্যারও ব্যবহার করা হতে পারে, যা গুগলের পণ্যতালিকার বাইরে, যেমন- ভিএলসি ভিডিও প্লেয়ার, সংবার্ড মিউজিক প্লেয়ার ইত্যাদি।


অন্য আরো কিছু সুবিধার :


০১. লিনআক্সের ওপরে ভিত্তি করে বানানো হলেও তা হবে খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি, তাই খুব সহজেই একজন নবীন কমপিউটার ব্যবহারকারী তা ব্যবহার করতে পারবে। ০২. ব্রাউজারের উইন্ডোগুলোর মতো হবে এর কাজ করার উইন্ডোগুলো, তাই কাজের সময় পাবেন ভিন্ন আমেজ। ০৩. ভাইরাস, ম্যালওয়্যার, স্পাইওয়্যার ইত্যাদির ঝামেলা থেকে মুক্তি দেবে এই অপারেটিং সিস্টেম। তাই সিকিউরিটি সফটওয়্যার আপডেট করার ঝামেলাও কমে যাবে। ০৪. এতে ডেস্কটপেই সাজানো থাকবে প্রয়োজনীয় সব অ্যাপ্লিকেশন।


শেষের কথা


লিনআক্সের ওপরে ভিত্তি করে বানানো এই অপারেটিং সিস্টেম বাজারে আসার আগেই তাকে নিয়ে শুরু হয়ে গেছে অনেক জল্পনা-কল্পনা। কেউ তা দেখছেন ভালো দৃষ্টিতে, আবার কেউ খারাপ দৃষ্টিতে। কেউ বলছেন এটি বাজারে তেমন নাম করতে পারবে না, আবার কেউ বলছেন এটি বাজারে আসলে অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের ব্যবসায়ের বারোটা বেজে যাবে। সবাই এক বিষয়ে একমত নাও হতে পারেন। গুগল ক্রোম বাজারে না আসা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষায় থাকতে হবে আসলে এতে কি আছে তা জানার জন্য।








০ টি মন্তব্য



মতামত দিন

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার মতামতটি দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।







পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? পুনরায় রিসেট করুন






রিভিউ

আপনি লগ ইন অবস্থায় নেই।
আপনার রিভিউ দেওয়ার জন্য লগ ইন করুন। যদি রেজিষ্ট্রেশন করা না থাকে প্রথমে রেজিষ্ট্রেশন করুন।